সম্প্রতি গত বেশকিছু দিন আগেই রাজধানী ঢাকা গাজীপুরের একটি এলাকায় নিজ প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় একেএম জিয়াউর রহমান ও মাহমুদা আক্তার জলি নামে এক শিক্ষক দম্পতিকে। উদ্ধারকালে তাদের কারো দেহেই কোন আঘাতের চিহ্ন পায়নি পুলিশ। তাদের মৃত্যুর আসল কারণ উদ্ঘাটন করতে পুলিশের একাধিক সংস্থা প্রায় হয়রান!
গাড়ির ভিতরে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের কারণে এই দম্পতির মৃ’ত্যু হতে পারে বলে শুরু থেকেই ‘জল্পনা’ ছিল। সম্প্রতি, তদন্তকারীদের ‘ধারণা’ নতুন মাত্রা পায় যখন একটি বিড়াল প্রাইভেটকারে রাখার পর ছটফট শুরু করে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিড়ালটির ভয়ানক পরিস্থিতি হলে দ্রুত বের করা হয়। বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে বিড়ালটি পড়া প্রাণ হারাতে বসেছিল।
বিড়ালবাজিতে জিতে তদন্তে ফেরে প্রাণ। এখন তদন্তকারীরা বলছেন যে বিড়ালকে অনুসরণ করলে তারা দম্পতির মৃত্যুর রহস্যের দরজা খুলতে পারে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বিড়াল ঘিরে রহস্য ভেঙ্গে গাড়ির ভেতরে ও বাইরের বিভিন্ন চিহ্ন পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল (বিসিএসআইআর), বিআরটিএ, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সসহ বিভিন্ন সংস্থায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তদন্তকারীরা।
রাসায়নিক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাড়ির জ্বালানি ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকলে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হতে পারে। কোনো কারণে গাড়িতে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হলে যাত্রীদের শ্বাস-প্রশ্বাসে ব্যাঘাত ঘটবে। কোনো জায়গায় অক্সিজেন কম থাকলে কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিআরটিএর মাধ্যমে গাড়ির বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে গাড়ির ভেতরে গ্যাস সংক্রান্ত কিছু ত্রুটি পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই শিক্ষক দম্পতির মৃত্যু হয়েছে কি না, তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গাড়ির এসি এবং গ্যাসের আরও বিস্তারিত পরীক্ষা চলছে। বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট পাওয়ার পর পুলিশ এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসবে। তবে তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ওই প্রাইভেটকারে বিড়াল রাখার বিষয়টি তদন্ত সংশ্লিষ্টদের মাথায় আসে। বিড়ালটি গাড়িতে উঠার পর অবস্থা খারাপ হলে দ্রুত বাইরে চলে আসে। সে সময় বিড়ালটির মরণদশা বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন বিশেষজ্ঞরা। বিষপান ছাড়াও এটি একটি পূর্বপরিক’ল্পিত ‘হ””ত্যা”’কা”ণ্ড ‘কি”না তাও তদন্তাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়, ঘটনার দিন নিজেদের প্রাইভেটকার নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হন ওই দম্পতি। এরপর সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও তাদের কোনো হাদিস না পাওয়ায় বিষয়টি পুলিশকে অবগত করে স্বজনরা। এরপর অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।