দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্প্রতি সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা অংশস গ্রহন করেছে। এমনকি অনেকেই শখের বসেও অংশগ্রহন করেছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ফুটবল প্রতীকে মেম্বার প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছিলেন আব্দুল হামিদ। তবে তিনি মাত্র ৬৪ টি ভোট পেয়েছেন। এবার তিনি নিজেই জানালেন তরা এই ভোটে অংশগ্রহন প্রসঙ্গে বিস্তারিত।
‘মনে বড় আশা ছিল মেম্বার হইয়া এলাকার মানুষের সেবা করমু। আমি গরীব মানুষ। ফুটপাতে জিলাপি ও গুলগুলি বানাইয়া বিক্রি করে জীবন চালাই। এইবারের নির্বাচনে এলাকার মানুষ আমারে মেম্বার পদে প্রার্থী বানাইলো। মার্কা পাইলাম ফুটবল। এলাকার মানুষরে নিজ হাতে জিলাপি, গুলগুলি বানাইয়া একহাজার ৬০০ প্যাকেট করে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়াইছি। বিজয়ের পরে দুইডা গরু জ/বা/ই করে দশ মণ চাউলের ভাত ও দশ হাজার টাকা খরচ কইরা সবাইরে পেট ভইরা খাওয়ামু বলে মাটি ছুঁয়ে ওয়াদা করেছিলাম। আমার ধারণা ছিল কমপক্ষে ৮০০ ভোট পাইয়া আমি নির্বাচিত হমু। কিন্তু আমি ভোট পাইছি মাত্র ৬৪ টি। ভোটে হারায় কষ্ট পেলেও, নিজে মাইকিং করে খাওয়ার দাওয়াত দিলাম, কেও আইলো না। এইডাই মনের মধ্যে খুব কষ্ট পাইছি।’ এভাবেই কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ফুটবল প্রতীকের মেম্বার প্রার্থী আব্দুল হামিদ ( ৬০)। তিনি ওই ওয়ার্ডের বাইগর পাড়া এলাকার বাসিন্দা। প্রথম বারের মতো অনেক আশা করে তিনি মেম্বার প্রার্থী হয়েছিলেন।
সরেজমিনে মঙ্গলবার দুুপুরে আব্দুল হামিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, তার বাড়ির সামনে কয়েকটি চেয়ার, বেঞ্চ সাজানো। সেখানে তিনি তার স্ত্রী কন্যাকে নিয়ে অপেক্ষা করছেন, এলাকাবাসী তার বাড়িতে আসবে। তাদের খাওয়ার জন্য রাখা দু’টি গরু, দশ মণ চাউল ও দশ হাজার টাকা বুঝে নিয়ে, মহা ধুমধামে রান্না করে খাবে। রক্ষা হবে নির্বাচনের সময় দেওয়া তার ওয়াদা। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও, কেউ তার দাওয়াতে যায়নি। আব্দুল হামিদ জানান, জণগণ হয়তো তাদের দেওয়া কথা রাখতে পারেননি। কিন্তু আমি আমার কথা রাখতে চেয়েছি। এ জন্যই আমি সোমবার নিজে মাইকিং করে আমার বাড়িতে গরু জ/বা/ই করে খাওয়ানোর দাওয়াত দিয়েছি। এই দাওয়াতে কেউ সাড়া দেননি। তবে পুরো বিষয়টি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
নির্বাচনে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে প্রার্থীরা জনগনের মাঝে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে থাকেন। আব্দুল হামিদও এক প্রতিশ্রতি রেখেছিলেন। তবে তিনি জয়ী হতে পারেননি। অবশ্যে তিনি জয়ী না হলেও তার দেওয়া প্রতিশ্রতি রক্ষা করতে নিজে মাইকিং করে খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছেন। তবে তার দাওয়াতে কেউ সাড়া দেয়নি।