লিওনেল মেসির অধিনায়কত্বের মাধ্যমেই আর্জেন্টিনা ৩৬ বছর পর শিরোপা জয়ের সৌভাগ্য অর্জন করলো। বিশ্বকাপে শিরোপা জয় করার পর কাতার থেকে দেশে ফিরে যায় আর্জেন্টিনা ফুটবল চ্যাম্পিয়ন দল। দেশে ফেরার পর রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করার কথা ছিল মেসিসহ সকল ফুটবলারদের। কিন্তু সেটা আর করলেন না আর্জেন্টিনার ফুটবল দল, অনেকটা বিমুখ করলেন রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণকে।
কিন্তু লিওনেল মেসির নেতৃত্বাধীন দল আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজের সঙ্গে দেখাই করেনি। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও মেসি সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজের শাসনামলে আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপসহ তিনটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছিল। যে কারণে ফার্নান্দেজ খুব খুশি।
বিশ্বকাপ জেতার পরও তিনি কেন রাষ্ট্রপতি ভবনে যাননি, তা নিয়ে এখন চলছে নানা গু’ঞ্জন। দেশটির শীর্ষ ইংরেজি সংবাদপত্র ‘বুয়েনস আইরেস টাইমস’ জানিয়েছে, রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হওয়ার আশ”/ঙ্কায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে না গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিশ্বকাপের শিরোপা উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা।
তবে বিশ্বকাপ জয়ের গৌরবকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা রাষ্ট্রপতির ছিল না বলে জানিয়েছে তার কার্যালয়।এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে- প্রেসিডেন্টের ইচ্ছা ছিল কাসা রোসাদার ব্যালকনিতে তার সঙ্গে কেবল ফুটবলার আর আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা থাকবেন। সেখানে রাজনৈতিক নেতাদের এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদেরও আমন্ত্রণ না জানানোর নির্দেশ দেন তিনি।
একটি রেডিও স্টেশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দেজ বলেন, আমি একেবারেই একজন ফুটবল ভক্ত। আমি কখনই চাই না কেউ ফুটবলের সঙ্গে রাজনীতিকে মেশাক। আমি ফুটবলকে ফুটবলের জায়গায়, রাজনীতিকে রাজনীতির জায়গায় রাখতে পছন্দ করি।
তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ক্লদিও তাপিয়ার কাছে আমন্ত্রণ গিয়েছিল “কাসা রোসাদায়” আসার। আসা বা না আসা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। তারা আসেনি তাতে কোন সমস্যা নেই। এটা সম্পূর্ণ তাদের উপর নির্ভর করে। আমি তাতে কিছু মনে করিনি।
প্রেসিডেন্ট ভবনের বিখ্যাত ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দর্শকদের সামনে বিশ্বকাপ তুলে ধরার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দল সেখানে যেতে না চাওয়ায় সব আয়োজনই শেষ পর্যন্ত বাতিল করতে হয়েছে। দলটি কাতার থেকে দেশে ফেরার পরের দিন, প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষ বুয়েনস আইরেস শহরে জড়ো হয়েছিল বিশ্বকাপ জয় উদযাপন করতে। সেটা রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠান বাতিলের আরেকটি কারণ।
তবে আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ের উৎসব সু-সম্পন্ন ভাবে এবং কোন ধরনের বিপত্তি ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তবে তার আমন্ত্রণে আর্জেন্টাইন ফুটবল দল কেন সাড়া দিল না সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। তবে বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি রাষ্ট্রপ্রধান।