বাংলাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক একটি দল ‘বাংলদেশ আওয়ামী লীগ’। আর এই দলটির অন্যতম একটি সংগঠন হলো ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’। দেশ ও দেশের মানুষে জীবনমান উন্নয়নে রীতিমতো নানা ভূমিকা রেখে চলেছে এ সংগঠনটি। তবে মাঝে মধ্যেই নানা কারণে সংবাদ মাধ্যমে শিরোনামে এসে থাকে এই সংগঠনটির বিভিন্ন নেতার নাম। আর এরই আলোকে এবার আলোচনায় এলেন মো. আরমিন আহমেদ নাম এক ছাত্রলীগ নেতা।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় ১২ বছর পর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে ছাত্র রাজনীতিকে বিদায় জানালেন ছাত্রলীগ নেতা আরমিন আহমেদ। গতকাল (৬ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে আরমিন তার ফেসবুকে দুধ দিয়ে গোসলের একটি ভিডিও পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, এক শিশু দুধ ভর্তি জগ ছাত্রলীগ নেতার সারা শরীরে ঢেলে দিচ্ছে। যে ভিডিও রেকর্ড করছিল, সে প্রশ্ন করে করে উঠে আর রাজনীতি করবা? এ সময় হাত নেড়ে না করেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।
জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেতার বাড়ি উপজেলা সদরের বড়বাড়ি এলাকায়। তিনি পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নবগঠিত উপজেলা ছাত্রলীগের ১ নম্বর সহ-সভাপতি।
ভিডিওটির ক্যাপশনে আরমিন লিখেছেন, ‘১২ বছর ছাত্রলীগ থেকে আমার অর্জন ৭টি মামলার আসামি, গত ১ বছর ধরে সর্বোচ্ছ গ্রাইন্ড নিয়ে পুলিশি হয়রানি। বিদায়ের সময় পেশাগত জীবনে পঙ্গু, খালি পকেট, দুধ দিয়ে গোসল করে রাজনীতি থেকে বিদায় নিলাম। ছাত্রদল থেকে আগত, বিএনপি পরিবার থেকে আগত এমন কারো কাছে আত্মসমর্পণের চেয়ে ত্যাগ করাই ভালো সিদ্ধান্ত, আমি হৃদয় দিয়ে নয়, আবেগ দিয়ে রাজনীতি করেছি, আবেগে ভেজালের কোনো অবকাশ নেই। দীর্ঘজীবী হোক সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ভালবাসার সুলতান গ্যাং…দ্যা কোল্ড ”ব্লা’ডেড ‘মা’র্ডা’রা’র। প্রকৃতি কাউকে খালি হাতে ফেরায় না,প্রকৃতি ঠিক সময়ে ফেরায় দেবে, অপেক্ষায় রইলাম।’
আরমিন আরও লিখেছেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলাম। এছাড়াও অন্য পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আমি সিনিয়র। তবে বুধবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উমান খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নাজমুল আলমকে সভাপতি ও তোফায়েল আহমেদ তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ। যা আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পাই। এই কমিটিতে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা আমার জুনিয়র। কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে জুনিয়রদের রেখে আমাকে ১ নম্বর সহ-সভাপতি করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার ১২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ৭টি মামলার আসামি হয়ে দুবার কারাবরণ করেছি। এইচএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত জেলে বসে দিয়েছি। অথচ আমাকে মূল্যায়ন না করে মূল্যায়ন করা হয়েছে জামায়াত-বিএনপি থেকে উঠা আসা ছেলেদের। তাই নিজেকে কলঙ্কমুক্ত করতে দুধ দিয়ে গোসল করেছি।’
তবে তার এমন কাণ্ডে রীতিমতো গোটা এলাকাজুড়ে বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যদিকে নিজের জীবনের কথা না ভেবে এতবছর ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেও দল থেকে তেমন কিছুই না পাওয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই।