বাংলাদেশ এর আরেকটি টক অব দা টাউনে পরিনিত হয়েছে গোলাপ নামের এক এমপির নাম। যিনি একটা সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চালাতেন ট্যাক্সি। জানা গেছে সেখানে তিনি গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এবার এ নিয়ে একটি বিশেষ লেখনী প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই লেখনী তুলে ধরা হলো হুবহু:-
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমপি মো. আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ)। একসময় তিনি ছিলেন নিউইয়র্কে টেক্সি ড্রাইভার, পিজ্জা শেফ হিসেবেও কাজ করেছেন, ঔষুধের দোকানে কেরানির চাকরিও করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারি হবার বদৌলতে তিনি এখন মিলিয়নিয়ার। গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরেই কিনেছেন অন্তত ৯ টি বাড়ি।
শুক্রবার অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি)’ তাদের এক রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। পাঠকদের রিপোর্টের চুম্বক অংশ তোলে ধরা হলো:
‘বাংলাদেশি পলিটিসিয়ান ক্লোজ টু প্রাইম মিনিস্টার হাসিনা সিক্রেটলি ওনস ওভার ফোর মিলিয়ন ডলার ইন নিউইয়র্ক রিয়েল এস্টেট’ শিরোনামের রিপোর্টে বলা হয়েছে, “এক সময়ের টেক্সি চালক মো. আবদুস সোবহান মিয়া নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এলাকার অভিজাত ভবনে প্রথম অ্যাপার্টমেন্ট কেনা শুরু করেন ২০১৪ সালে। পরের পাঁচ বছরে তিনি নিউইয়র্কে একে একে মোট ৯টি বাড়ির মালিক হন। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি (ডলারের বর্তমান বিনিময় মূল্য অনুযায়ী প্রায় ৪২ কোটি টাকা)।”
এমপির গোলাপের শুরুর দিকের আর্থিক অবস্থার বিবরণ দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, “শুরুর দিকে এমন পয়সাওয়ালা বাড়ির মালিক ছিলেননা গোলাপ। তাকে যারা চিনেন তারা বলছেন: ১৯৮০ সালের দিকে গোলাপ যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর কম বেতনের কাজ করতেন। কখনো পিজ্জা বানানোর কাজ করেছেন, আবার কখনো ছিলেন ঔষুধের দোকানের কেরানি এবং লাইসেন্সবিহীন টেক্সিও চালিয়েছেন।”
এমপি গোলাপের শুরুর দিকের আর্থিক অবস্থার বিবরণ দিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে, “শুরুর দিকে এমন পয়সাওয়ালা বাড়ির মালিক ছিলেননা গোলাপ। তাকে যারা চিনেন তারা বলছেন: ১৯৮০ সালের দিকে গোলাপ যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর কম বেতনের কাজ করতেন। কখনো পিজ্জা বানানোর কাজ করেছেন, আবার কখনো ছিলেন ঔষুধের দোকানের কেরানি এবং লাইসেন্সবিহীন টেক্সিও চালিয়েছেন।”
এতে বলা হয়, “কিন্তু বাংলাদেশে ফেরার পর সবার কাছে গোলাপ নামে পরিচিত এই মানুষটি নেতৃস্থানীয় লোক হয়ে গেলেন। আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের এই কর্মী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারির দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তিনি সংসদের একজন এমপি।”
২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড, মিডিয়া দলন এবং অবাধে দুর্নীতি করার অভিযোগ উঠেছে।”২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবর্হিভূত হত্যাকান্ড, মিডিয়া দলন এবং অবাধে দুর্নীতি করার অভিযোগ উঠেছে।”
গোলাপ যে টাকায় বাড়ি কিনেছেন সেটা যুক্তরাষ্ট্রের অর্জিত আয় নয় উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, “২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সহকারি হিসেবে যোগ দেবার ৫ বছর পর থেকে নিউইয়র্কে বাড়ি কেনা শুরু করেন গোলাপ। কাগজপত্র এবং টেক্সের দলিল ঘেঁটে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে কোনো আয় করেননি তিনি। এটা স্পষ্ট নয় যে তিনি কীভাবে তার স্থানীয় চাকরি থেকে সম্পত্তি কেনার জন্য মিলিয়ন ডলার জমা করতে পারেন।”
এতে বলা হয়, “শেখ হাসিনার সহকারি হিসেবে মাসে ১,০০০ ডলার আয় করে কীভাবে এই বাড়িগুলো কীনলেন তা স্পষ্ট নয়। যদি ধরেই নেয়া হয় যে বাংলাদেশে গোলাপের মিলিয়ন ডলারের আয় আছে, তাহলে বিদেশে টাকা জমা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে হতো। আর অনুমতি নিলে বিদেশে বাড়ি কেনার এ সুযোগ পেতেননা গোলাপ।”
যুক্তরাষ্ট্রে সম্পত্তির ব্যাপারে গোলাপের সঙ্গে মোবাইল, এসএমএস, ইমেইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনাে জবাব পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ইমেইল করা হলেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
এ দিকে এ নিয়ে এখনো মুখ খুলেননি অভিযুক্ত সেই সংসদ সদস্য। তবে তাকে নিয়ে এখন সবখানেই চলছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। অবশ্য এ নিয়ে দল থেকেও জানানো হয়নি কিছুই।