বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব শিকদারকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদর্শন ছাড়াই দাফন কাজ সম্পন্ন করার জন্য উচ্চ আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রেহাই পান কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মোরশেদা খাতুন। ওই ঘটনায় ঐ এলাকায় ক্ষোভের জন্ম হয় যার কারণে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
তিনি হাইকোর্টকে বলেন, ভুলটি অনিচ্ছাকৃত ও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হয়েছে। আমি এই জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। মঙ্গলবার (৬ জুন) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে ক্ষমা চান মোর্শেদা।
জানা গেছে, বাজিতপুর পৌরসভার দক্ষিণ রাবরকান্দির বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব শিকদার গত ২৬ জানুয়ারি রাতে প্রয়াত হন। পুলিশ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোর্শেদা খাতুন অনুপস্থিত ছিলেন। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষো”ভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনার তদন্ত চেয়ে ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিট আবেদনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব সিকদারের কবরস্থানে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইদুল হক সুমনের করা রিট আবেদনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ অন্যদের বিবাদী করা হয়।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি গার্ড অব অনার ছাড়া আবদুল মোতালেব সিকদারকে দাফন করায় ক্ষো”ভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, গার্ড অব অনার ছাড়াই দাফন করে মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা হয়েছে। এটা সহ্য করা যায় না।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জামুকার চেয়ারম্যানকে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরপর আজ হাইকোর্টের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তবে এই ধরনের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে সে বিষয়েও তাকে সতর্ক করে আদালত। একজন মুক্তিযোদ্ধা তার প্রয়ানের পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদর্শনের মাধ্যমে দাফন কাজ সম্পন্ন করা নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এই নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেই নির্দেশনা না মেনে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। আর তাই তাকে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে ক্ষমা চাইতে হলো।