নারায়ণগঞ্জের ঘটন নিয়ে নান বিতর্কের সৃষ্টি হেয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, এক ভাই যিনি প্রয়াত হয়েছে তিনি যুবদলের হয়ে কাজ করে এবং তার চাচাতো ভাই যুবলীগের হয়ে। তবে ঘটনা সেখানে নয়, ভাই প্রয়াত হওয়ার পর যুবলীগের ওই নেতা চাচাতো ভাই মিলন নিজেই পুলিশের কাছে ভাই হ// ত্যার বিচার চেয়ে মামলা করেন। তবে মামলার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনা আরো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় যখন বাদীরা মামলা করতে থানায় যায় তখন।
নারায়ণগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে নিহত শাওন প্রধানের ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকেই লাপাত্তা তার ভাই মিলন প্রধান। ওই রাতে তাকে নিয়ে থানায় যাওয়া চাচা মোক্তার হোসেন বলেন, পুলিশ আগেই জবানবন্দি লিখে রেখেছে। না পড়েই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়।
পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও বাদীর নামে কী ঘটেছে তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন। বাদী হিসেবে মিলন হোসেনের নাম রয়েছে। কিন্তু শাওন ভাইদের সবার নামের সাথে প্রধান আছে এবং বিয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কেউ কেন নিজের নাম ভুল লিখে মামলা করবে সেটাই বড় প্রশ্ন।
বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নারায়ণগঞ্জে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘ/ র্ষে নি/হত হন শাওন প্রধান, যাকে বিএনপি যুবদলের কর্মী বলে। এ ঘটনায় দুই দিন ধরে বিক্ষোভ করছে দলটি।
শুক্রবার শাওনের বড় ভাই বিএনপির পাঁচ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে আগের রাতে।
ওই দিনই বিএনপি বিস্ময় প্রকাশ করে, অভিযোগ ওঠে, পুলিশ চাপা দিয়ে মামলা করে। তবে জেলা পুলিশ সুপার এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটা চাপের যুগ নয়।
শাওনের বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শাওন পুলিশের গুলিতে নি/ হত হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করবেন, তারপর সরকারের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে পুলিশ আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করছে, গণগ্রেফতার শুরু করেছে। আমরা নিন্দা জানাই।’
বাদী কোথায়?
মামলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর এক সংবাদ মাধ্যম দুই দিন ধরে মিলন প্রধানের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি।
মিলনের বাড়ি ফতুল্লা উপজেলার নবীনগরের বক্তাবলীতে। এটি নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
শুক্রবার বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও মিলনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এছাড়া মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি তোলেননি।
শনিবারও একই ছবি। স্বজনরা বাড়িতে গেলে তারা জানান, মিলন এখনো বাড়িতে নেই। ফোনটা আগের দিন বন্ধ ছিল।
“পুলিশ যখন আমাকে একটি কাগজ দিয়েছিল, আমি তার কিছুই পড়তে পারিনি”
মামলা দায়েরের দিন রাতে মিলনের চাচা মোক্তার হোসেনও থানায় যান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ভাগ্নির মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা উচিত। এ জন্য দুপুর ২টার দিকে আমি ও মিলন থানায় যাই। রাত ১২টার দিকে থানা থেকে লাশ নিয়ে যাওয়ার কাগজ দেওয়া হয়। এরপর লাশ নিয়ে আমরা শাওনের বাসায় আসি।
থানায় এত সময় কাটানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাকে ওসির কক্ষে আটকে রেখেছিলাম, সেখানে আমরা লাশের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
মামলা প্রসঙ্গে মোক্তার বলেন, পুলিশ হাজার হাজার মামলা লিখছে। আমরা লিখি না। আমরা ওসির রুমে বসলাম। আমরা জানতাম না কি লেখা ছিল। আমরা শুধু লাশ পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। পুলিশ অনেক কাগজে মিলনের স্বাক্ষর নিয়েছে। কিন্তু আমরা এর কোনটাই পড়তে পারিনি।
ঘটনার পর থেকে মিলন কেন আত্মগোপন করে আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুঝতেই পারছেন, আপনি মারা গেছেন। তা ছাড়া তার ওপর চাপটা বেশি। ছেলেটা আর কত চাপ নেবে?’
শাওনের চাচা বলেন, আমি আমার ভাগ্নির হ/ ত্যার বিচার চাই। সে রাজনীতি করুক আর না করুক, কইরা আমার ভাগ্নির ওপর গুলি চালাচ্ছে এটা পরিষ্কার।
শওনের এর অন্যান্য আত্মীয় কি বলছে?
নিহত শাওনের চাচাতো ভাই জিহাদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, শাওনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে ফরহাদ ও মিলন সেখানে যান। ফরহাদ ভাই ও আমি হাসপাতালে ছিলাম এবং মিলন ভাই ও চাচা ছাড়পত্র নিতে থানায় যান। .
জিহাদ হোসেন জানায়, থানায় যাওয়ার পর মিলন প্রধান ও তার চাচা মোক্তার হোসেনকে সদর থানার ওসির কক্ষে আটকে রাখা হয়। খুব জরুরি না হলে ফোন তুলতে দেওয়া হতো না। সেখান থেকে রাত ১২টার দিকে হাসপাতালে যান তারা। তারপর অ্যাম্বুলেন্সে বাড়ি চলে গেল।
শাওনের বড় ভাই ফরহাদ প্রধান বলেন, আমি ও আমার বন্ধু এবং আরেক প্রতিবেশী লাশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বাক্ষর করি। জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট ও অনেক পুলিশ সদস্য সেখানে ছিলেন।
“আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলাম। আর বড় ভাই মিলন ও মামা থানায় ছিলেন। তারা দুপুরের পর থেকে লাশ নেওয়ার জন্য থানায় অপেক্ষা করেন। রাতে লাশ আমাদের কাছে দেওয়ার পর দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কেন দাফন পাহারা দিয়েছে তা আমরা বুঝতে পারিনি।
মামলা করার বিষয়ে মিলনের সঙ্গে কথা হয়নি উল্লেখ করে ফরহাদ বলেন, আমার ভাই বা চাচা মামলা করার বিষয়ে আমাকে কিছু বলেনি। তারা বলে, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেপার নিয়ে আসছি।
দাফনের সময় কঠোর নিরাপত্তা
শাওনের বোনের শ্যালক আব্দুল জলিল জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের গাড়ি টাকির পর তাদের বাড়ির দিকে রওনা হয়।
ছুড়ছেন। আপনাকে পুলিশকে, এমনকি গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদের দলীয় নেতা-কর্মীদের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে।
বলা হয়েছে, শাওন প্রধান ফতুল্লার নবীনগর স্বাস্থ্য ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতে। স্বজনরা জানান, সকাল সকাল ১০টার দিকে তিনি মালামাল নিতে বাসা থেকে বের হন।
নারায়ণ সদর মডেল পার্টি পুলিশ পরিদর্শক (দন্ত) মো. সাইদ নেতা এজাহারের বরাত বলেন, আলোচনায় বলা হয়েছে, ১০টার দিকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের আনুমানিক পাঁচ হাজার কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে- লাইটপাটকেল, লোহার রড, ক্লিস্টিক সহ অস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় মিছিলে পুলিশের ওপর পাটকেল ও ককট বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন।
‘বেলা পৌনে ১১টার দিকে নম্বর ২ নম্বর রেলগেট এলাকা দিয়ে শাওন প্রধান হওয়ার সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিরুদ্ধে- কর্তৃপক্ষের ওপর আক্রমণ করতে থাকে। এ সময় অস্ত্রের উপস্থিতি এবং এটির উপর শাওন মাথা ও বুকে প্রতীকে পড়ে যান।
‘তাৎৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়ভাবে নারায়ণ রিয়া নিয়ন্ত্রণের নিয়ন্ত্রণে উদ্ধার করে গ্রামগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়ার ডাক্তার তাকে প্রয়াত ঘোষনা করে।
এই ঘটনায় পুলিশের দিকে আঙ্গুল তুলছে অনেক নেতারা। তারা দাবি করছে আওয়ামী লীগের নির্দেশে পুলিশ এমন কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে পুলিশ যদি গুলি ছোড়ার জন্য শাওন প্রয়াত হয় তাহলে তার গায়ে কেন কোন গুলি পাওয়া গেল না এই নিয়েও চলছে নানা ধরনের বিতর্ক। এই ঘটনার আসল সত্যতা উৎঘটনের জন্য পুলিশ এখনো তাদের নিজস্ব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত শেষে ঘটনা আসর সত্যতা নিশ্চিত করতে পরবে বলে আশাবাদী পুলিশ।