ফজরের নামাজের জন্য তিনি আজান দিচ্ছিলেন। এমন অবস্থায় হাসানি নামের একজন মিসরী মুয়াজ্জিনের ইন্তেকাল হয়েছে। তিনি আজান দেওয়ার সময় আস্তে আস্তে পড়ে যান এবং এক পর্যায়ে আর সাঁড়া পাওয়া যায় না।
তার এইভাবে চলে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এই মুয়াজ্জিনের জন্য দোয়া করেন এবং তাদের নিজেদের জন্যও এই ধরনের ‘খাতেমাহ বিল-খাইর’ (উত্তম বিদায়) পাওয়ার জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করেন।
সৌদি আরবের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল আরাবিয়া জানিয়েছে, মিসরের আল-মানুফিয়া জেলার আল-বাজাউর এলাকার এক মসজিদে স্থানীয় সময় শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে। আজানের ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ (নামাজের জন্য এসো)-এই অংশটুকু বলা শেষ হওয়ার পর মুয়াজ্জিন আলহাজ হাসানির ইন্তেকাল হয়।
স্থানীয়রা জানান, তিনি আদতে অত্যন্ত ভালো এবং সদাচারী একজন মানুষ ছিলেন। আলহাজ হাসানির পুত্র মাহমুদ হাসানি জানান, কয়েক বছর যাবত তার বাবা মহল্লার মসজিদে স্বেচ্ছায় এবং বিনা পারিশ্রমিকে আজান দেন। শুধু তিনি-ই নামাজি ছিলেন না; বরং অন্যদেরও নামাজের প্রতি যত্নবান হতে দাওয়াত দিতেন।
ইন্তেকালের দিনের ঘটনা বর্ণনা করে মাহমুদ হাসানি বলেন, ‘প্রতিদিনের মত শুক্রবারও ভোরে অজু করে আমার বাবা মসজিদে যান। তিনি আজান শুরু করেছেন, আমরা তাও শুনি। কিন্তু হঠাৎ ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ বলার পরে আর কোন আওয়াজ শোনা যায়নি। আমরা দৌঁড়ে মসজিদে গেলাম একথা জানতে যে, কেন আজান পরিপূর্ণভাবে দেওয়া হলো না। কিন্তু যখন আমরা মসজিদে প্রবেশ করি, তখন দেখি আমার পিতা মসজিদের মেঝোতে কিবলামুখী হয়ে পড়ে আছেন। বুঝতে পারি-তিনি আর পৃথিবীতে নেই।
মাঝে মাঝে এমন ধরনের প্রয়ান হওয়ার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে শোনা যায়। তবে এইভাবে প্রার্থনারত অবস্থায় কিংবা আজান দেওয়ার সময় না ফেরার দেশে চলে যাওয়া সৃষ্টিকর্তার আহবানেই হয়ে থাকে। ধর্মপ্রাণ মানুষেরা সৃষ্টিকর্তার নিকট এই ধরনের প্রয়ান আশা করে থাকে। কিন্তু সবার ভাগ্যে কী সেই সৌভাগ্য জুটে থাকে। এককথায় সবাই সেটা পায় না। পৃথিবীতে ভালো কাজ এবং সৃষ্টিকর্তাকে ডাকা এই ধরনের সৌভাগ্যের দ্বার খুলে দিতে পারে বলে মনে করেন ধর্মপ্রান মানুষেরা।