সন্তান অন্যায় অনিয়ম করলে পিতা-মাতা শাসন করবে এটা স্বাভাবিক একটি বিষয়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমান সময়ের অনেক যুবক ও যুবতীরা বেপরোয়া স্বভাবের হয়ে উঠছে। তাদের পছন্দের বাইরে গেলেই ঘটিয়ে ফেলছে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটনা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা সূত্রে জানা যায়, এক ব্যক্তির ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
টাকা না দিলে ছেলের লা//শ পাওয়া যাবে। সংক্ষিপ্ত বার্তা যা কিছুক্ষণ পর আসতে থাকে। উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা পুলিশের ( police ) দ্বারস্থ হন। উদ্ধার করা হয় কিশোরকে। তবে অ’পহরণকারী ধরা পড়েনি। কারণ এই অপহরণ নাটকের লেখক নিজেইও কিশোর।
গত শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য রাজধানীর বাড্ডার ( Badder ) বাসা থেকে বের হন ওই কিশোর। খুব দূরে তাদের ফার্নিচারের কারখানা। সেখানে কিছুক্ষণ বসুন। পরে তাকে চলে যেতে দেখা যায়। নামাজ শেষে আর বাসায় ফেরেনি কিশোর।
হঠাৎ তার বাবার মোবাইলে একটি টেক্সট মেসেজ আসে। তার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অপহরণকারীরা সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না পেলে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। তার চাচার মোবাইল ফোনেও একই ধরনের টেক্সট মেসেজ পাঠানো হয়। তবে সব মেসেজ আসে কিশোরের মোবাইল থেকে। নির্যাতনের ছবিও পাঠানো হয়।
কোনো উপায় না দেখে বাবা দৌড়ে থানায় যান। প্রথমে সাধারণ ডায়েরি এবং পরে অপহরণ মামলা। পুলিশের ( police ) পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও ছায়া তদন্ত শুরু করেছে।
তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে গোয়েন্দারা ছি’নতাইকারীর অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এসময় অপহরণকারীকে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন কিশোরের বাবা। বিকাশের দোকান থেকে টাকা সংগ্রহ করতে দেখা যায় ওই কিশোরকে।
গোয়েন্দা থানায় গিয়ে দেখেন, অ’’পহরণকারী আর কেউ নয়, কিশোর নিজেই। তার সঙ্গে এক কিশোরকেও উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণের নাটক উন্মোচিত হয়। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোর জানায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে রাগ করেই সে অপহরণের নাটক সাজিয়েছে। বাড়ি ছেড়ে গাজীপুরে প্রেমিকের বাড়িতে চলে যান তিনি। তাকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।
অপহরণের নাটকের কথা জানতেন না।
পুলিশ বলছে, ওই কিশোর বিভিন্ন খেলায় আসক্ত ছিল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (গুলশান বিভাগ) মশিউর রহমান বলেন, অল্প বয়সে ভিডিও গেম খেলে তারা এ ধরনের সংস্কৃতিতে জড়িয়ে পড়ছে। অপহরণের নাটক সাজিয়ে বাবার কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা এবং অ’পহরণের মতো জ’ঘন্য পন্থায় মামলা করা তাদের পক্ষে খুবই কঠিন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন,সন্তানরা কী করছে তা যদি পরিবারের পক্ষ থেকে সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ না করা হয়, তাহলে সামনের দিনগুলো আমাদের জন্য বজ্রসংকেত।
ছেলের এমন কর্মকাণ্ডে বাবা-মা বিব্রত। পুলিশ অভিভাবকদের এই বয়সের কিশোর-কিশোরীদের প্রতি আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়।
এই ঘটনায় ওই ছাত্রকে শনাক্ত করতে সম্ভব হয় পুলিশ। তাকে সনাক্ত করে তার পিতা-মাতার কাছে তাকে তুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনা সে কেন ঘটিয়েছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই ছেলে বলে, তার চাওয়া পাওয়ার কোন মূল্য দেয়না তার পিতা-মাতা। যার জন্য তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। অন্যদিকে তার পিতা-মাতা বলে দিন দিন ছেলের চাহিো বৃদ্ধি বেড়েই চলেছে যেটা কুলিয়ে উঠতে পারছে না দরিদ্র পিতা-মাতা।