পাকিস্তানের নির্বাচন-পরবর্তী রাজনীতি চলছে নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে। নাটকের শেষ দৃশ্যে নওয়াজ শরীফ ও বিলওয়াল ভুট্টোর দল সরকার গঠনে যোগ দিচ্ছে।
গত শুক্রবার থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুই দলের মধ্যে জোট সরকারের বৈঠকের খবর আসতে শুরু করে। তবে গতকাল লাহোরে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে দুই দল। পিএমএল-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো এবং কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে দেখা করেছেন। বৈঠকে জোট সরকার গঠনে বিলাওয়াল ও আসিফের সহযোগিতা চান শাহবাজ। দুই দলের নেতারা প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে আলোচনা করেন।
খুব শিগগিরই দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে পিপিপি। কোথায় জোট গঠন প্রক্রিয়া, কারা রাষ্ট্রপতি পদ পাবেন, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর এখন এটা অনেকটাই নিশ্চিত যে তারা জোট সরকারের মাধ্যমে পাকিস্তানে ক্ষমতার আসনে বসতে যাচ্ছে।
তবে বিলাওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী করার শর্তে পিপিপি জোট সরকার গঠনের দিকে যাবে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ও পিপিপি চায়। তাই জোট ঘোষণা হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
এর আগে শুক্রবার নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানকে বাঁচাতে সব দলকে জোট হিসেবে সরকার গঠনের আহ্বান জানান। দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তৃতায় নওয়াজ দাবি করেন, নির্বাচনে তার দল সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে। তিনি বলেন, আমরা অন্যান্য দলের অবস্থানকে সম্মান করি। তাই সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তিনি একটি সমৃদ্ধ পাকিস্তান গড়তে সকলের সহযোগিতা কামনা করে আলোচনার আহ্বান জানান।
এমন পরিস্থিতিতে ফের কাঁপছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও টিভির সূত্রে জানা গেছে, পিটিআইয়ের বিপুল সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়লাভের পর দলটি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক ডেকেছে। যদিও পিএমএল-এন বা পিপিপির সঙ্গে জোট গড়ার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি পিটিআই। এ ছাড়া বিক্ষোভ-আন্দোলনের মতো কর্মসূচিও অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তবে পিটিআই কর্মী-সমর্থকরা ধীরে ধীরে মাঠের কর্মসূচিতে বাধার মুখে পড়ছেন। এদিকে, পাঞ্জাবের চাকওয়ালে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করার জন্য পুলিশ পিটিআই-সমর্থিত দুই প্রার্থী এবং তাদের 300 সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ফলস্বরূপ, পিটিআই সমগ্র পাঞ্জাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত করেছে।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন 8 ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার 60 ঘণ্টারও বেশি সময় পরে পূর্ণ ফলাফল ঘোষণা করেছে। ঘোষিত 264টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে স্বতন্ত্ররা 101টিতে জয়লাভ করে এগিয়ে রয়েছে। তাদের প্রায় সবাই ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থন করেন।