সৌদি আরবের কাবা শরীফের গিলাফ পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হজ পালন করার ঠিক আগে কাবা শরীফের গিলাফ সরানোর পর সেখানে একটি বিশেষ ধরনের সাদা কাপড় দিয়ে আবৃত করে দেয়া হয়। সাধারণত যে সকল ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সেখানে হজ করতে যান তাদের ইহরামের শ্বেতশুভ্রতার সাথে মিল রেখে এই সাদা রঙের গিলাফ পরিয়ে দেওয়া হয়। এবার সেই রীতির পরিবর্তন করছেন সেখানকার পরিচালনা পর্ষদ।
মুসলমানদের দুটি পবিত্র মসজিদ – মক্কার মসজিদ আল হারাম ও মদিনার মসজিদে নববী – এই দুটি মসজিদ পরিচালনা পর্ষদের ঘোষণা অনুসারে গতকাল মক্কার কাবা গিলাফ পরিবর্তন করেছে। সূত্র: আরব নিউজ, বিবিসি।
এতদিন ঈদুল আযহার আগে হজের প্রধান অনুষ্ঠান অর্থাৎ আরাফাত ময়দানে জমায়েত হওয়ার আগে তা পরিবর্তন করা হতো, কিন্তু এবার হজের সময় ঐতিহ্য অনুযায়ী অর্থাৎ ৯ই জিলহজের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে ঢাকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো: আবু সালেহ পাটোয়ারী বলেন, এবার রেওয়াজের ব্যতিক্রম করা হয়েছে, কারণ সে দেশের সরকার হিজরি সনকে গুরুত্ব দিয়ে গিলাফ পরিবর্তন করার কথা বলেছে।’ তিনি বলেন, ‘হজের মূল আনুষ্ঠানিকতার দিনই হাজিদের উপস্থিতিতে গিলাফ পরিবর্তন করাটাই ছিল দীর্ঘকালের রেওয়াজ। হজের সময় একটি নতুন গিলাফ দেওয়ার পরে, পুরানো গিলাফ সাধারণত একটি মুসলিম দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানকে বা বিভিন্ন মুসলিম দেশের মসজিদে উপহার হিসাবে সম্মানিত করা হতো। এবার এটা কিভাবে কী করবে সেটা আমি জানি না। কারণ বিষয়টি মুসলিম বিশ্বকে জানানো হয়নি।
সৌদি প্রবাসী সাংবাদিক রুমি সাঈদ জানান, মক্কা ও মদিনার প্রধান দুটি মসজিদের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ চলতি মাসের শুরুতে মহরমের প্রথম তারিখে গিলাফ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, ইসলাম পূর্ব সময়ে ইয়েমেনের বাদশাহ তুব্বা আবি কারব আসাদ যিনি সেই সময় ইয়েমেনের বাদশা ছিলেন তিনিই প্রথম কাবা শরীফকে একটি বড় গিলাফ দিয়ে আবৃত করেন। সেই সময় তিনি বিশেষ কাপড় ব্যবহারের জন্য ইয়েমেন থেকে কাপড় আনিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে মক্কা বিজয় লাভ করার পর নবী মোহাম্মদ এই কাবা শরীফকে বড় আকারের লাল এবং সাদা কাপড় দিয়ে আবৃত করে দেন।