Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নতুন বিপদের মুখে হাসিনা, নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জরুরী বার্তা দিল আ.লীগ

নতুন বিপদের মুখে হাসিনা, নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জরুরী বার্তা দিল আ.লীগ

সরকার পরিবর্তনের পর থেকে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে গেছেন। কেউ দেশে, কেউ বিদেশে আছেন, এবং অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। কর্মীরা বাড়িতে ফিরতে বা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না, অনেকেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। অনেকে আবার আর্থিক সংকটে পড়েছেন।

এমন অবস্থায়, তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলীয় নেতৃত্বকে দোষারোপ করছেন। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দলের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আত্মীয়করণ, দুর্নীতি, ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন এবং পদ বিক্রির অভিযোগ তুলছেন তারা। অপরদিকে, সিনিয়র নেতারা কর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি না করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নেতাকর্মীদের কিছুটা ক্ষোভ থাকতেই পারে। তাদের ত্যাগ ও অবদানের জন্য আমাদের প্রতি তাদের অভিমানও থাকতে পারে। তবে এই সংকটময় পরিস্থিতিতে মব জাস্টিসের বাস্তবতা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় নেতারা দলের অবস্থান জানাচ্ছেন, কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতিতে সংযত থাকা প্রয়োজন।

অনেক নেতাকর্মী প্রশ্ন তুলছেন, কেন এতদিন ক্ষমতায় থাকার পরও দল শক্তিশালী করা যায়নি। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পরেও অনেক সিনিয়র নেতা দেশে ছিলেন, কিন্তু বর্তমান সংকটে কেন নেতারা আত্মগোপনে গেছেন?

তৃণমূলের ক্ষোভ প্রশমিত করতে, দলের সিনিয়র নেতারা বারবার ধৈর্যের পরামর্শ দিচ্ছেন।

পরিস্থিতি কীভাবে উন্নতি হবে?

বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন হতে পারে। পরিস্থিতি উন্নতির জন্য নিচের কিছু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে:

দলীয় ভাঙন বা বিভক্তি এড়াতে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অভ্যন্তরীণ কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে, পারস্পরিক সমঝোতা ও শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখতে হবে। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ও সংহতি বজায় থাকবে, যা সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে।

তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ ও অভিমানের প্রতি গুরুত্ব দেয়া দরকার। তাদের কথা শুনে এবং সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিলে দলীয় সংগঠন আরও শক্তিশালী হতে পারে।

সিনিয়র নেতাদের দৃশ্যমানতা ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করতে হবে। এতে দলের মনোবল বেড়ে যাবে এবং আস্থা ফিরবে। বিশেষ করে যারা আত্মগোপনে আছেন, তারা কর্মীদের কাছে আরও সক্রিয়ভাবে উপস্থিত থাকলে দলকে নেতৃত্ব দেয়া সহজ হবে।

জনগণের আস্থা ও সমর্থন ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারের কার্যক্রমে যে ভুলগুলো হয়েছে, সেগুলো স্বীকার করে সংস্কারের পথে হাঁটতে হবে। বিশেষ করে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং দলীয় পদের অপব্যবহার বন্ধ করে, সাধারণ মানুষের জন্য কার্যকর নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে।

দলীয় নেতাকর্মীদের ভবিষ্যৎ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে দলীয় কর্মীরা সক্রিয়ভাবে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের মাধ্যমে হামলা-মামলার ভীতি দূর করতে হবে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে কর্মীদের নিরাপত্তা দেয়া জরুরি।

মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে সঠিক বার্তা পৌঁছানো দরকার। নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পাশাপাশি জনগণকে বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

এই পদক্ষেপগুলো যদি কার্যকরভাবে গ্রহণ করা হয়, তাহলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হতে পারে।

About Nasimul Islam

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *