সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে জানাজা ও কফিন মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। .
বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ২টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গায়েবানা জানাজা ও কফিন শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আসিফ মাহমুদ জানান, পুলিশ ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলা ও গুলিতে শহীদ ভাইদের জন্য আগামীকাল দুপুর ২টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জানাজা ও কফিন মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলায় গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল পালন করতে হবে। ঢাকায় অবস্থানরত সবাই সময়মতো চলে আসবেন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে।
প্রসঙ্গত, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন মঙ্গলবার সহিংস রূপ নেয়। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হন শতাধিক আন্দোলনকারী ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একই সঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে।
গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মন্তব্য করেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’ প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যে ক্ষিপ্ত হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। তারা ধরে নিয়েছেন ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ তাদেরকেই বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রত্যাহার ও কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রোববার মধ্যরাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে।
সোমবারও দুপুর থেকে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। রাত ১০টার পর আন্দোলনকারীরা একটি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং সারাদেশের সর্বস্তরের ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে তাদের সমর্থনে রাজপথে নামতে আহ্বান জানায়।