পোশাক উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল সুতার দাম বাড়িয়েছে টেক্সটাইল মিলগুলো। গত দুই মাসে সব ধরনের সুতার দাম অনেক বেড়েছে। প্রতি সপ্তাহে সুতার দাম বাড়ছে ৫ থেকে ১০ সেন্ট। এ সময় আমদানি পর্যায়ে দাম বাড়েনি। দামের ব্যবধান এখন প্রায় ১ ডলার। এমনকি ১ থেকে ২ সেন্ট একটি প্রতিযোগিতামূলক পোশাকের বাজারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে তৈরি পোশাক খাত সংকটে পড়েছে।
পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, স্থানীয় সুতার দাম বাড়ায় তারা আমদানি বাড়াতে বাধ্য হবেন। অন্যদিকে বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, দাম বাড়ানো ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। দাম বাড়ার অন্তত ৩টি কারণের কথা বলছেন তারা। এগুলো হলো- ডলার সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় পরিমাণ তুলা আমদানি করতে না পারা, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণের সীমা হ্রাসের কারণে কাঁচামাল সংগ্রহের অর্থের অভাব এবং গ্যাস সংকটের কারণে অর্ধেক উৎপাদন ক্ষমতা নিষ্ক্রিয়। তবে শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধসহ অন্য সব খরচ আগের মতোই রয়েছে। এসব কারণে অর্ধেক সুতা বিক্রি করে কোনো না কোনোভাবে মোট খরচ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয়ভাবে সুতার দাম বাড়লে তারা আমদানি বাড়াতে বাধ্য হবে। তারা সেটা চায় না। দেশের স্বার্থে তারা দেশীয় সুতার ব্যবহারকে প্রাধান্য দিতে চান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে পোশাক রপ্তানিতে মূল্য সংযোজন বেড়েছে ১২ শতাংশ। অর্থাৎ দেশীয় সুতার ব্যবহার বেড়েছে পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। তারা এই ধারা অব্যাহত রাখতে চায়। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে কঠিন প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হচ্ছে পোশাক খাতকে। যে কারণে অস্তিত্বের স্বার্থে সুতাসহ সব ধরনের কাঁচামালের প্রতিযোগিতামূলক দর খুঁজতে হয়। ফারুক হাসান বলেন, এখন পর্যন্ত তারা আমদানি মূল্যের চেয়ে কিছু বাড়তি দাম দিয়ে আসছেন। এ ধরনের ব্যবধান গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে বস্ত্র খাত আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিজিএমইএ সদস্য কারখানা থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, গত ২ জুলাই দেশীয় বাজারে ৩০ কার্ড সুতার দাম ছিল আউন্স প্রতি ৩ ডলার ২০ সেন্ট। পরের চার সপ্তাহে, যথাক্রমে ৩ ড/লার ২৫ সেন্ট, ৩ ড/লার ৩০, ৩ ড/লার ৩৫ এবং ৩ ড/লার ৫০ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে দাম বাড়ছে। ফলে গত ২৭ আগস্ট আউন্স প্রতি দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩ ডলার ৮৫ সেন্ট। এই দুই মাসে কারখানার আমদানিকৃত সুতার দাম বেড়েছে মাত্র ৫ সেন্ট। গত ২ জুলাই একই মানের সুতার দাম ছিল ২ ডলার ৮৫ সেন্ট। গত ২৭ জুলাই এ হার দাঁড়িয়েছে ২ ডলার ৯০ সেন্টে।