ক্যাসিনো কাণ্ডে যে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম উঠে এসেছিল, তারমধ্যে অন্যতম আলোচিত ছিলেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। তিনি ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তারের পর তাকে যুবলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়। এরপর তিনি গত ২২ আগস্ট সর্বোচ্চ আদালত থেকে জামিন পান। জামিন পাওয়ার পর তিনি হাসপাতালেই কয়েক দিন কাটান। তবে জামিন পাওয়ার পর বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন সম্রাট। এদিকে গতকাল সমর্থকের দলবল নিয়ে মহড়া দেন। তবে ফের কপাল পুড়তে পারে সম্রাটের।
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
শনিবার (২৭ আগস্ট) দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ইসমাইল হোসেন চৌধুরীর জামিন বাতিলের আবেদন তৈরি করেছি। রোববার (২৮ আগস্ট) হাইকোর্টে এ আবেদন করা হবে।
এর আগে গত ২২ আগস্ট জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের মামলায় জামিন পান ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মোঃ আসিফুজ্জামান তাকে জামিনের আদেশ দেন।
এ সময় সম্রাটের আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ জানান, সম্রাট গু”রুতর অসুস্থ। এ বিষয়ে আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়া হয়েছে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাকে জামিন দেন।
জামিনের ক্ষেত্রে আদালত সম্রাটকে কিছু শর্ত দিয়েছেন জানিয়ে আফরোজা শাহনাজ বলেন, সম্রাটকে তার পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। আর তিনি আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশে যেতে পারবেন না।
অপরদিকে জামিনে মুক্তি পেয়ে শুক্রবার (২৬ আগস্ট) হাসপাতাল ত্যাগ করেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোঃ রসুল আমিন (শিপন) বলেন, গতকাল তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিয়েছি। তবে আজ দুপুরের দিকে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের মামলায় ২৪ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সম্রাট। পরে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এর আগে গত ১৮ মে এ মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিলের আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে হাইকোর্ট বেঞ্চ একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে সম্রাটকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর র্যাব জানায়, গ্রেফতারের সময় সম্রাট ও আরমান নিষিদ্ধ দ্রব্য সেবনের মাধ্যমে আ”স’/ক্ত অবস্থায় ছিলেন। তাদের কাছে বিদেশি নিষিদ্ধ দ্রব্য ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ছয় মাসের কারাদ’ণ্ড দেন।
গত সোমবার রাতের দিকে জামিনে মুক্তিলাভ করেন ক্যাসিনো কাণ্ডে আলোচিত সম্রাট। তিনি অসুস্থ এমন ধরনের কারণ দেখিয়ে মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসারত ছিলেন। এদিকে সেই সময় গ্রেফতার হওয়ার পর সম্রাটকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তাকে সাথে নিয়ে কাকরাইলে অবস্থিত সম্রাটের যে কার্যালয় ছিল সেখানে অভিযান পরিচালনা করেন। এরপর সেখানে বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ দ্রব্য সহ অস্ত্র এবং বন্য প্রাণীর চামড়া পায়।