Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / নতুন করে আবারও মুখ খুললেন সেই ইয়াসা, বললেন আশায় ছিলাম, কবে সবকিছু খুলে বলব

নতুন করে আবারও মুখ খুললেন সেই ইয়াসা, বললেন আশায় ছিলাম, কবে সবকিছু খুলে বলব

গত মাস দুই আগে পরীক্ষা দেয়ার নাম করে বাসা থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেন না ইয়াসা মৃধা সুকন্যা নামে এক কলেজেশিক্ষার্থী। এরপর অনেক খোঁজা-খুজি করে তার কোনো সন্ধান না পেয়ে শেষমেষ পুলিশের শরণাপন্ন হন ইয়াসার মা নাজমা ইসলাম। এমনকি মেয়ের খোঁজে সংবাদ সম্মেলনও করতে দেখা যায় তাকে।

ইয়াসা এখন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ব্যবস্থা নেবে ডিবি পুলিশ। যেহেতু তার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা রয়েছে। তার সহযোগী বন্ধু ওই মামলার আসামি। তাই এসব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবে ডিবি পুলিশ।

ইয়াসা বলেন, “২৩শে জুন নিখোঁজ হওয়ার আগে আমি অনেক মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলাম। আমি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। আমার বন্ধু চিশতি দোষী নন, সে সম্পূর্ণ নির্দোষ। ওকে আমি গত ২২ জুন বলি, আমি বের হব। সে বলেছে কই যাবা? আমি বলেছি, জানি না কই যাব, কিন্তু আমি বের হব।’

তিনি বলেন, ‘পরের দিন ২৩ জুন দুপুর ১টায় কলেজে আমার মডেল টেস্ট ছিল। আর বৃহস্পতিবার ছিল উচ্চতর গণিত পরীক্ষা। আম্মু আমাকে সাড়ে বারোটার দিকে কলেজে নিয়ে ওয়েটিং রুমে বসে রইল। আমি ক্লাসে না গিয়ে ওইভাবে বেরিয়ে পড়লাম। আমি বাইরে গিয়ে দেখি আমার বন্ধু অপেক্ষা করছে, প্রায় ১টা বাজে। বলল, কলেজে যাবি? আমি বলি, না, আমি যাব না। সে বলে, কেন যাবা না? তুমি তো জানো আমাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তারপর বলল, ঠিক আছে তাহলে আজকে কলেজে যাওয়ার দরকার নেই। চল আজ ঘুরি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মায়ের কথামতো, আমি ডমিনোস-এ গিয়েছিলাম, এই করছি, ওটা করছি- এমন কিছুই না। প্রথমে সিদ্ধেশ্বরী থেকে খিলগাঁও যাই। আমরা খিলগাঁও থেকে টিএসসিতে খাই। ভাবছিলাম সেখান থেকে কোথায় যাব। তারপর এক বন্ধুর পরামর্শে কার্জন হলে গেলাম। কার্জন হলে যাওয়ার পর ৬টা বেজে গেল। এরপর সেখান থেকে গেন্ডারিয়া যাই, ওর এক বন্ধু থাকে— সেখানে। ওকে বিশ্বাস করে গেছি। গেন্ডারিয়ায় যাওয়ার পরে অনেক্ষণ বসেছিলাম। অনেক্ষণ আড্ডা দিই। সেখান থেকে বের হয়ে রিকশা ভাড়া করি। রিকশাওয়ালার ফোন নিয়ে আমি যাকে ভালোবাসি তাকে ফোন করে বলি, কোথায় তুমি? তিনি বলেন, আমি এইমাত্র অফিস ছেড়েছি। আমি বলি, খিলগাঁও তালতলা আসতে পারবে? তিনি বলেন, মিরপুর থেকে পৌঁছাতে অন্তত চার-পাঁচ ঘণ্টা লাগবে। তুমি বরং এক কাজ করো, তুমি মিরপুর বৈশাখী মার্কেটের সামনে আসো।’

মিরপুর যাওয়ার পর দেখলাম দাঁড়িয়ে আছে। ও ভাড়া দেয়। তারপর আমার হাত ধরে বললেন, দেখ, ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই। আমি তোমার বাবা-মাকে জয় করার চেষ্টা করছি। চল দেখি কি ঘটেছে. বাড়ি ফিরে যাও। সে বারবার আমাকে বাড়ি ফিরতে বলেন। তখন আমি তাকে বললাম, দেখ তুমি আমাকে বাড়ি যেতে বলছ; আজ যদি বের হই, তোমার কাছেও আসব না। তাহলে আমার ‘আ’ত্ম”হ’নন’ ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না। এছাড়া আমি যেহেতু সারাদিন বাসায় ছিলাম না, সেহেতু তারা আমাকে খুঁজে পেলে মে”’রে’ ফেলতে পারে। এবং আপনি আমার সম্পর্কে সবকিছু জানেন’ – ইয়াসা বলল।

তিনি বলেন, “তিনি ভয় পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তার এক বন্ধুকে ফোন করেন। তিনি আইনজীবীদের ম্যানেজ করেছেন। ওই রাতেই অর্ধেক কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। পরের দিন ২৪শে জুন জুমার নামাজের পর কাজী সাহেব আসেন। এরপর আমরা বিয়ে করি।

ইয়াসা মৃধা সুকন্যা আরও বলেন, ‘মা বলেছেন, আমি ফেসবুকে সক্রিয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফেসবুক খুলতে পারিনি। আমার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা হয়েছে. তিনি (মা) আমার আইডিতে প্রবেশ করেন এবং পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করেন। তিনি নিজেই মেসেজ দিয়ে কারসাজি করছেন। আমি জানি না সে এটা কেন করছ।’

ইয়াসা বলতে থাকেন, ‘কয়েকদিন পর সংবাদ সম্মেলন করবেন শুনেছি। সে যা চায় তাই করুক। আমি বাড়ি যাচ্ছি না, এটা নিশ্চিত। আশায় ছিলাম কবে এই টিভি চ্যানেলে আসব। আমি সব বলব।

মায়ের দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘মায়ের কান্না, কান্না ঠিক; তিনি বোরকা পরেন এবং ইসলামিক নিয়ম মেনে চলেন। কিন্তু পর্দার আড়ালে তার কী আছে তা কেউ জানে না। আমার বন্ধুরা সেখানে ছিল। তারা আরো বলেন, আসলে তোমার মায়ের মতো মা নেই। আসলে আমার মায়ের মত মা নেই। এমন মা আসলে কারো নেই। সে আমাকে বালিশ দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। সে বিষ খা’ও’য়া’নো’র চেষ্টা করছিল। আমার হাতে এখনো নি’র্যা’ত’নের চিহ্ন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘একদিন আমি আমার প্রেমিকার নাম নিয়ে বললাম, আমি তাকে বিয়ে করতে চাই। আমি ওকে ভালবাসি. আমি তাকে আমার জীবনে চাই। তখন মা কয়েল জ্বালিয়ে দিচ্ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার হাতে একটা জ্বলন্ত কয়েল বসিয়ে দেয়। আমার হাত পুড়ে যায়। তারপর বললাম, তুমি যাই কর না কেন, আমি তার নাম ভুলব না।’

তবে নিজের বিরুদ্ধে মেয়ের এমন অভিযোগ রীতিমতো অস্বীকার করেছেন মা নাজমা ইসলাম। তার দাবি, পড়াশোনা না করার জন্য হয়তো একটু শাসন করতেই পারি, কিন্তু ৭ম শ্রেণির পর থেকে তার গায়ে কোনো হাত দেননি বলেও দাবি করেনি তিনি।

About Rasel Khalifa

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *