ভূমিকম্প এমনই একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা আসে না কোনো ধরণের আগাম বার্তা দিয়ে। আর এই কারণে এই ভূমিকম্প একটি মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে গণ্য হয় সবখানে। আর এই ভূমিকম্পে সম্প্রতি শেষ হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছে তুরস্কের।
এ দিকে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। যার মাত্রা রিখটার স্কেলে ৮-এর বেশি হতে পারে। ভূতাত্ত্বিকরা বলছেন, বাংলাদেশসহ ভারত ও মায়ানমারের কিছু জায়গায় বড় ধরনের চ্যুতির কারণে যে কোনো মুহূর্তে ভূমিকম্প হতে পারে। সিলেট ও চট্টগ্রাম ছাড়াও সবচেয়ে বড় দুর্যোগের মুখে পড়বে রাজধানী।
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ তিনটি গতিশীল প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত: ভারত, বার্মা এবং ইউরেশীয়। গত কয়েকশ বছরের ইতিহাসে এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে সিলেট পর্যন্ত বিগত ৪০০ থেকে এক হাজার বছরে কোনো বড় ভূমিকম্প ঘটেনি এবং এসব স্থানে শক্তি জমা হয়েছে।
ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ। এরপর রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগ মাঝারি ঝুঁকিতে রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা ও বরিশাল বিভাগ কম ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভূতত্ত্ববিদ ডাঃ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, সিলেট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এই শক্তি জমা হয়ে ৮ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প ঘটায়। যে কোন সময় এই শক্তি বেরিয়ে আসতে পারে। এই শক্তি একবারে বা পর্যায়ক্রমে বেরিয়ে আসতে পারে।
রাজধানী থেকে ডাউকি ফল্টের উৎপত্তিস্থল থেকে ১৫০ কিলোমিটার এবং ভারত ও বার্মা প্লেটের সাবডাকশন জোন থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব হলেও ১.৫ মিলিয়ন ভবনের শহরটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ভূমিকম্পে রাজধানীর এক শতাংশ ভবন ধ্বংস হলে তিন লাখ মানুষ আহত হবে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা যাবে আরও অনেকে।
এ অবস্থায় ভূমিকম্প প্রতিরোধী নিরাপদ অবকাঠামো তৈরির পাশাপাশি নিয়মিত মহড়া ও সচেতনতা বাড়াতে এই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদি আহমেদ আনসারী বলেন, এখন থেকে প্রতিটি ভবনে তল্লাশির পাশাপাশি তদারকি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকাজে বাহিনী গঠন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এ দিকে ভূমিকম্পের এই আগাম বার্তা শুনে ইতিমধ্যে সতর্ক হতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। জানা গেছে সরকার থেকে নেয়া হচ্ছে এ বিষয়ে বড় ধরনের উদ্যোগ।