কখন-কোথায় চুরি করতে হবে, এব্যাপারে আগে থেকেই পরিকল্পনা করতেন তারা। আর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিন আসার কয়েকদিন আগেই উক্ত এলাকায় নিতেন বাসা ভাড়া। সম্প্রতি এই চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে আরো অনেকেই জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
চুরির আগে রাজধানীর একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। প্রতি সপ্তাহে রেকি করেন । এরপর তিনি কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম থেকে সহযোগীদের ডাকেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী দশ সদস্যের বাবু গ্রুপ চুরি করে তাদের বাড়িতে ফিরে আসে। এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এই ধূর্ত দলে পেশাদার নৃত্যশিল্পীও রয়েছে।
চট্টগ্রামের সাগর, একসময় নৃত্যশিল্পী ছিলেন। তার একটি নাচের দলও ছিল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাকও পড়েছিল। এগুলো ছাড়াও এখন বাবু গ্রুপে নাম লিখিয়েছেন। এখন সে এই চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য।
গত ১৭ অক্টোবর সকালে রাজধানীর বংশালের একটি মার্কেটে চুরির ঘটনা ঘটে। এ কাজে নয় থেকে দশ জন অংশগ্রহণ করে। দলটি তালা ভেঙে দোকানে ঢুকে কয়েক লাখ টাকা চুরি করে। ব্যবহার করা হয় কিছু কৌশল। কাপড় দিয়ে, কখনও ছাতা দিয়ে ঢেকে রাখে চারপাশ।
মামলার তদন্তকালে এ চক্রের চার সদস্যকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মজবুত তালা ভাঙার যন্ত্রাংশ ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও দলটিতে দশজন সদস্য রয়েছে। রাজধানীতে কেউ স্থায়ীভাবে বসবাস করে না। চুরির কয়েকদিন আগে দুই থেকে তিনজন ঢাকায় আসেন। লক্ষ্য নির্ধারণের পর দলের অন্যান্য সহযোগীদের জানানো হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (লালবাগ বিভাগ) উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এই চক্রের বেশ কয়েকজন সদস্য ওইসব এলাকায় স্বর্ণের দোকান, মানি এক্সচেঞ্জের দোকান বা বড় পাইকারি দোকানগুলোকে টার্গেট করে। তারপর তারা রেকি করে। কত লেনদেন হয়, কতজন কর্মচারী আছে তা খুঁজে বের করুন।
পুলিশ বলছে, তারা গত এক বছরে রাজধানীতে ৩০টি চুরির কথা স্বীকার করেছে। তাদের প্রধান টার্গেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এ ব্যাপারে হারুন অর রশীদ সংবাদ মাধ্যকে জানান, তাদের পিটে একটি ব্যাগে চুরির সবরকম সরঞ্জাম থাকে। তারা চুরির কয়েকদিন আগেই ওই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নেন। এরপর সকলেই এক সঙ্গে হয়ে চুরির পর টাকা-পয়সা বুঝে নিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান।