আগামী ১৬ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচন। এই নির্বাচনে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার এবং আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী আইভী। এই নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ব্যপক আলোচনা-সমালোচনা বিরাজ করছে। শুধু তাই নয় এমনকি একে অন্যের সাথে নানা ধরনের তর্ক-বির্তকে জড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি এই নির্বাচনকে উদ্দেশ্যে করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বেশ কিছু কথা বললেন তৈমুরকে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তাদের দলের ভেতরে ‘ধূম্রজাল’ সৃষ্টি হয়েছিল, এখন সেটা কেটে গেছে। দিন শেষে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ বলেও মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমুর আলম খন্দকারকে নিয়ে তিনি বলেছেন, তাঁর পায়ের তলায় মাটি নেই বলে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করছেন। নারায়ণগঞ্জে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। ঢাকার উপকণ্ঠের এই নগরীতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমানের সঙ্গে আইভীর বিরোধ দীর্ঘ দিনের। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবারও আইভীকে মনোনয়ন দিলেও শামীম ওসমানদের পরিবার ঘনিষ্ঠদের তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমুরের প্রচারে দেখা যায়। দলের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মেয়র প্রার্থী হয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ হারিয়েছেন তৈমুর আলম খন্দকার। তবে তাঁর নির্বাচনী প্রচারে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা রয়েছেন। শামীম ওসমানও তৈমুরের পক্ষে কাজ করছিলেন বলে নৌকার প্রার্থীর শিবির থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল।
এরমধ্যে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসে এই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দেন শামীম ওসমান। তার পরদিন মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে নির্বাচনী পথসভায় যোগ দিয়ে দলের ভেতরে ‘ধূম্রজাল’ কেটে যাওয়ার কথা বললেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। তৈমুর আলম খন্দকারকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘উনি কখনো বলেন বিএনপির প্রার্থী, আবার কখনো বলেন মানুষের প্রার্থী, আবার কখনো বলেন জনগণের প্রার্থী। উনি এবার বলছেন, কেল্লা ফতে।’ তৈমুর আলম খন্দকারকে শেষ পর্যন্ত ভোটের লড়াইয়ে থাকার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘দয়া করে যাইয়েন না, আগামী ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনের ফলাফলটা দেইখ্যা যান। তারপর বুঝতে পারবেন কত ধানে কত চাল।’ নারায়ণগঞ্জ বাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, নির্বাচন নিয়ে উৎসাহ–উদ্দীপনা বয়ে যাচ্ছে। সেই আনন্দময় পরিবেশে কেউ যদি ছন্দপতন ঘটায় তাঁরা তা হতে দেবেন না।
তৈমুর আলম খন্দকার এবং আইভী দুজনেই তাদের জয়ের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এবং শেষ সময়ের প্রচার-প্রচারনা নিয়ে খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা দুজেনেই। এমনকি তারা দুজনেই তাদের জয়ের লক্ষ্যে খুবই আশাবাদী। এই জয়ের জন্য তারা নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি ও প্রদান করেছেন নারায়ণগঞ্জবাসীকে।