চলতি বছরের ২০ আগস্ট ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগর ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহেল খানের ভাইয়ের ৯ বছরের মেয়ে মনসুরা পানিতে ডুবে মারা যায়। কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মানসুরার লা”শ দাফন করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়।
ওই মামলার বরাত দিয়ে প্রতারক চক্রের এক সদস্য মনসুরের চাচা সোহেল খানের কাছ থেকে পুলিশ পরিচয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে বলে জানা গেছে। মোবাইল ফোনে ফোন করে টাকা দাবি করে বিকাশ করতে বলে। আবার টাকা না দিলে অপমৃত্যুর মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে ভুক্তভোগী সোহেল খান এ তথ্য জানান। শুধু সোহেল খানই নয়, নলছিটি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুলকেও কল করে এই প্রতারক চক্রটি। তার কাছে সিআইডির প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দিলীপ কুমার সাহার পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করা হয়।
ঝালকাঠি জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতারকরা মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মা”রা যাওয়া মানসুরার চাচা সোহেল খান বলেন, ১২ অক্টোবর এসআই পরিচয়ে এক ব্যক্তি বাংলালিংক নম্বর থেকে আমার মোবাইলে কল করে বলেন, আপনার ভাইয়ের মেয়ের মৃত্যু থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন, সেটা নিষ্পত্তি করতে হবে। আমি আদালতে আছি, এখনই ২৩০০ টাকা বিকাশে করুন। না হলে ওয়ারেন্ট বের করে আপনাকে ধরা হবে।
যে ব্যক্তি নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়েছিল, তিনি আরও বলেন, বিকেলে আপনার ভাই মিন্টু খানকে থানায় পাঠিয়ে ৯টি কাগজপত্র নিয়ে যাবেন। কাগজে আমার স্বাক্ষর, ওসির স্বাক্ষর, ম্যাজিস্ট্রেটের লাল কালির চিহ্ন এবং তাঁর সিল-স্বাক্ষর থাকবে। এই টাকা দিতে হবে. ওই নম্বর থেকে আমার ভাই মিন্টু খানকেও ফোন করে একই কথা বলা হয়। কিন্তু আমি কোথাও টাকা দিইনি।
অপরদিকে নলছিটি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনামুল জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে আমার মোবাইল নম্বরে বাংলালিংক কোম্পানির একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল আসে। অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে দিলীপ কুমার সাহা, প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক, সিআইডি বলে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, খারাপ কাজের আলামত পরীক্ষা করতে কেমিক্যাল লাগবে। টাকা পাঠানোর পর কেমিক্যাল আনা হবে। কিছুক্ষণ পর, আরেক ব্যক্তি নিজেকে তার পিওন পরিচয় দিয়ে একই কথা বলে বিকাশে টাকা দাবি করে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মহিতুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া যাচাই-বাছাই ছাড়া কারো ফাঁদে পা দিয়ে টাকা লেনদেন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।