Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা ও বয়সের বাঁধা নিয়ে কড়া সমালোচনা করলেন শিক্ষামন্ত্রী

দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা ও বয়সের বাঁধা নিয়ে কড়া সমালোচনা করলেন শিক্ষামন্ত্রী

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতির কথা বারবার বলা হলেও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা মন্ত্রী নিজেই। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা কতটুকু মানসম্মত সে বিষয়ে তিনি নজর দেয়ার কথা বলেছেন দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। তিনি এবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি ভর্তি পরীক্ষায় বয়সের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি কতটুকু যৌক্তিক সে বিষয় নিয়েও অসংগতির দিক তুলে ধরেন।

ভর্তি পরীক্ষায় মেধার প্রমাণ দিয়ে ভর্তির সুযোগ দেয়া হলেও সেখানে এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। দীপু মনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অবাধ শিক্ষার কথা বলা হলেও আমাদের দেশের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উল্টো নিয়ম তৈরি করছে। মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর কোনো শিক্ষার্থী যদি ইঞ্জিনিয়ারিং করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তাকে সুযোগ দেওয়া হয় না। শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা একাধিকবার অংশগ্রহণের সুযোগ পায় না। প্রথমবার ফেল করলে দ্বিতীয় দফায় ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না দেওয়া অযৌক্তিক।

বুধবার (২০ জুলাই) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের সম্মেলন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল। তাদের শিক্ষার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে শতভাগ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনা সম্ভব হলেও মানের দিক থেকে আমরা পিছিয়ে আছি। এখন আমাদের গুণগত মান অর্জন করতে হবে। নিজেদের মান শুধু নিজেরাই নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পাওয়া উচিত। এজন্য অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ‘

তিনি বলেন, মানের দিক থেকে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমান হতে হবে। এখন শিক্ষার মান নিশ্চিত করা হবে। স্নাতক সার্টিফিকেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গেলেও ক্যারিয়ারে খুব একটা কাজে আসে না। দক্ষতার অভাবে তারা পিছিয়ে পড়ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার পরিবেশ বিবেচনা না করে শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি করছি। আর কত শিক্ষার্থী ভর্তি করা যায় তা নিয়ে আমরা এখন ব্যস্ত। আমাদের দেখতে হবে ১০০ বছরের পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে যে বিষয়গুলো চালু করা হয়েছিল আজকের দিনে তার প্রতিটি বিষয় একইভাবে প্রাসঙ্গিক কি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘এই বয়সের পর ভর্তি হতে পারবেন না, একবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবেন না, এই বিষয়ে ভর্তির পর অন্য বিষয়ে পড়তে পারবেন না। এগুলো আমরা কেন বলছি, সেটা আমার বোধগম্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি ১৮ বছর বয়সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমি সাহিত্য, পদার্থবিদ্যা বা রসায়ন নিয়ে পড়ব। ছয় মাস, এক বছর, তিন বছর পরে আমার মনে হচ্ছে আমি এই বিষয়ে পড়তে চাই না। কিন্তু আমার সামনে পথ খোলা নেই। আমি স্বীকার করতে হবে, এটা আমার অধ্যয়ন বিরতি। সারা বিশ্বে এটা করা গেলে বাংলাদেশে কেন করা যাবে না? চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই শিক্ষার গুণগত মান অর্জন করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’

এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দিক, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক দিল আফরোজা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। এবার শুধু শিক্ষা মন্ত্রী নয় এর আগেও অনেক শিক্ষাবিদেরা শিক্ষার মান নিয়ে সমালোচনা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা থেকে অনেকটা দূরে রয়েছে, এমনটাই জানিয়েছেন তারা। তবে এবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এই সমস্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে বলেছেন।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *