মাথায় শেরওয়ানি টুপি, গায়ে পাঞ্জাবি, পুরোপুরি বরের বেশে বিয়ের আসরে উপস্থিত হন রুবেল হোসেন নামের ২২ বছরের বিয়ের পাত্র। সাধারণভাবেই বিয়ের আসরে বিয়ে পড়াতে উপস্থিত হলেন কাজী। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া বিয়ের পাত্রীর সাজসজ্জা শেষ। হঠাৎ করে সেখানে হাজির হলেন পরিমল কুমার সরকার যিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের দেখেই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে কাজী। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না। তাকে ধরার পর বাল্যবিয়ে পোড়ানোর অপরা’ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদ’ণ্ড প্রদান করে। আর সেখানেই পাত্র রুবেলকে জরিমানা হিসেবে গুনতে হয় ২ হাজার টাকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে দিনাজপুর বিরামপুর উপজেলা খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দণ্ডপ্রাপ্ত নিকাহ্ রেজিস্ট্রার (কাজি) মো. রেহান রেজা (৪৭) চেংমারী গ্রামের হুমায়ুন রেজার ছেলে। তিনি খানপুর ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কাজি হিসেবে কাজ করছিলেন। পাত্র রুবেল ইসলাম (২২) নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের সেকেন্দার আলী ছেলে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও পরিমল কুমার সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে খানপুর ইউনিয়নের ন্যাটশন এলাকায় ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া এক ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন চলছে- এমন খবরে থানা পু’লিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন ইউএনও। বিয়ের জন্য নিকাহ্ রেজিস্ট্রার খসড়া লেখাও শেষ পর্যায়ে। এসময় ইউএনও’র উপস্থিত টের পেয়ে কাজি দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেন। আর বরের পাশে কনে সেজে মেয়ের ভাবি বসে পড়েন। বিষয়টি ইউএনওর নজরে আসে।
পরিমল কুমার সরকার যিনি ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তিনি বলেন ষষ্ঠ শ্রেণীর একজন নাবালিকার বাল্যবিয়ে হচ্ছে এ ধরনের খবর পাওয়ার পর এখানে আসি এবং ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। বিয়ের এই পাত্রকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর এই বিয়ে পড়াতে আসে নিকাহ রেজিস্টার রেহান রেজাকে ছয় মাসের জন্য বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। তবে এমন ধরনের বিয়ে যাতে না হয় সেই বিষয়ে উপস্থিত সকলকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।