কোন একটি সময় ছিলো যে সময় পুলিশের নাম শুনলে মানুষ ভয় পেত। তবে বর্তমান সময় পুলিশের নাম শুনে খুব কম মানুষই আছে যারা ভয় পায়। সম্প্রতি এক ঘটনা সম্পর্কে এক জাতীয় পত্রীকার সংবাদ সূত্রে জানা যায়, দুই ভাই মিলে এক পুলিশ সদস্যকে প্রহার করেছেন।
মাদারীপুরে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও জমি দখলসহ সাত মামলার আসামি ওসমান খান (৩২) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। আসামি গ্রেপ্তার অভিযানকালে বিপাকে পড়েন পুলিশ। এ সময় অভিযানের দায়িত্বে থাকা পুলিশের ওপর হামলা চালায় আসামি ওসমান খানের সমর্থক ও তার পরিবার। এতে আহত হয়েছেন সদর থানার পরিদর্শক (এসআই) আলতাফ হোসেন।
বুধবার (১৭ আগস্ট) মাদারীপুর শহরের শামসুন্নাহার বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন স্যানিটারি মালামালের ব্যবসায়ী হাওলাদার স্যানিটারির মালিক সজিব হাওলাদারকে (৩৩) চাঁদা না দেওয়ায় হামলা চালিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন ওসমান খান ও তার সঙ্গীরা।
আহতের পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, মাদারীপুর পৌরসভা ২ নং ওয়ার্ডের বিসিক শিল্পনগরী এলাকার ওসমান খান (৩২) ও তাহের খান (২৬) এরা দুই ভাই সন্ত্রাসী, জমিদখল, নেশা পান সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। হুমকি ধামকি ও মারধর করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কয়েক মাস আগে শহরের ২ নং ওয়ার্ডের শামসুন্নাহার বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে একটি স্যানিটারি মালামালের দোকান শুরু করেন সজিব হাওলাদার। ব্যবসা চালুর পর থেকেই ওসমান খান চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে সজিব হাওলাদারকে হত্যার হুমকি দিতেন ওসমান খান। বুধবার বিকেলে দোকান থেকে বাসায় যাওয়ার পথে তাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতারি পেটাতে শুরু করেন ওসমান ও তার ভাই তাহেরসহ বেশ কয়েকজন। এক পর্যায়ে সজিবের চিৎকারে লোকজন জড়ো হলে দৌড়ে পালিয়ে যান ওসমান খান ও তার সহোযোগিরা।
পরে স্থানীয়রা আহত সজিব হাওলাদারকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সজিবের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করেন।
এ ঘটনায় সজিবের বড় ভাই বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করলে ওসমান খান (৩৩) ও তাহের খান (২৫) কে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ। মামলার দায়িত্বে থাকা পুলিশের পরিদর্শক (এসআই) আলতাফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় মামলার আসামিকে ধরতে গেলে ওসমান ও তার পরিবার পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে অনেক খারাপ আচরণ করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে এবং সবার সহযোগিতায় ওসমান খান ও তার ভাই তাহের খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওসমান খানের নামে চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্মের ৭টি মামলা রয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের ধরার জন্য চেষ্টা চলছে।
প্রসংগত, অন-ডিউটি পুলিশের গায়ে হাত দন্ডনীয় অপরাধ। যারা অপারাধ করার পরে উল্টে আবার আইনের কাজে বাঁধা দেয় তারা দেশ ও জনগনের উভায়ের শত্রু। সেই দিক দিয়ে ওই দুই যুবক অন-ডিউটি পুলিশের গায়ে হাত দিয়ে আরো বড় অন্যায় করেছে।