‘দ্যা গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে। দীর্ঘ ৯২ বছরের বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো কোনো আরব মুসলিম দেশে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার কারণে আরব এবং মুসলিম বিশ্বের সংস্কৃতি সম্পর্কে বিদেশিদের অবগত করার সুযোগ পাচ্ছে কাতার। প্রতিদিন বহু সংখ্যক দর্শনার্থী দোহার বিভিন্ন সুদৃশ ও বিখ্যাত মসজিদ পরিদর্শনে আসছেন বলে জানা গেছে।
বিশ্বকাপ দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ দর্শক কাতারে আসছেন। ৯২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো আরব-মুসলিম দেশে ফুটবল বিশ্ব্কাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে আরব ও মুসলিম সংস্কৃতি জানার ও প্রত্যক্ষভাবে দেখার সুযোগ হয়েছে অনেকের। প্রতিদিন বহু সংখ্যক দর্শনার্থীরা দোহার বিভিন্ন মসজিদ পরিদর্শনে আসেন।
দোহাভিত্তিক সংবাদ দ্য পেনিনসুলা জানায়, কাতারের সাংস্কৃতিক এলাকায় কাতার গ্র্যান্ড ব্লু মসজিদে ফিফা বিশ্বকাপ উপলক্ষে শিল্প, সংস্কৃতি ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী মসজিদটিতে আসেন। কাতারের পুরুষ ও মহিলা স্বেচ্ছাসেবকরা বিশ্বকাপ দর্শকদের মধ্যে সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধন এবং সঠিক বোঝাপড়া ছড়িয়ে দিতে ৩০টি ভাষায় কাজ করছেন।
মসজিদের পাশে ‘আস্ক মি অ্যাবাউট উইমেন ইন কাতার’ নামে একটি লাউঞ্জ খোলা হয়েছে। সেখানে বিদেশি নারী পর্যটকদের জন্য বসে চা খাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ সময় তারা কাতারের সামাজিক জীবন সম্পর্কে জানতে পারবেন। স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সেখানে কাজ করছেন। স্বেচ্ছাসেবক উম্মে আহমেদ জানান, বিদেশি দর্শনার্থীদের ইসলাম ও আরব সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করতে মসজিদের কাছে এমন আয়োজন করা হয়েছে। তাছাড়া কাতারের পোশাক, খাবার, খাদ্য সংস্কৃতি ও স্থানীয় ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। বেশিরভাগ পর্যটকই কাতারে পরিবারের সামাজিক সম্পর্ক এবং বৈবাহিক ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।
কাতারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় দর্শনার্থীদের কাছে ইসলাম ও মুসলিম সংস্কৃতির পরিচয় দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। আরব ও ইসলামি সংস্কৃতি প্রচারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন বই ও ঐতিহ্যবাহী কাহওয়া বিতরণ করা হচ্ছে।
এছাড়া ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইসলাম’ নামে ছয়টি ভাষায় একটি ই-বুক এবং আরবি শেখার জন্য ‘দ্য কুইক স্টার্ট গাইড টু স্পোকেন আরবি’ নামে ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় আরেকটি ই-বুক প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন হোটেল, স্টেশন এবং আকর্ষণীয় স্থানগুলিতে এই ই-বুকগুলির জন্য QR কোড রয়েছে৷ এ ছাড়া দোহার বিভিন্ন স্থানে আরবি ও ইংরেজিতে মহানবী (সা.)-এর হাদিস সম্বলিত ম্যুরাল সাঁটানো হয়েছে।
মুসলিম সংস্কৃতি এবং ইসলাম সম্পর্কে জানানোর জন্য বিভিন্ন মসজিদে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। বিদেশি দর্শনার্থীদের নানাভাবে আপ্যায়ন করছেনও তারা। দিন দিন মসজিদগুলোতে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। খবর দ্য পেনিনসুলা এবং টিআরটি ওয়ার্ল্ড এর।