গত নভেম্বর মাসের ৩০ তারিখ নিখোঁজ হয় ছোট্ট শিশু মাহিয়া মাহি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো হদিস না পেয়ে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে যান বাবা আয়াত উল্লাহ। এরই মধ্যে ফোনের ওপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, মাহিকে অপহরণ করা হয়েছে। ৫ লাখ টাকা না দিলে তাকে আর জীবিত পাবে না বলেও দেয়া হয় হুমকি। পরবর্তীতে কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন আয়াত উল্লাহ। কিন্তু দূর্ভাগ্যবসত মেয়েকে ফিরে পেলেও মেয়ের মুখ থেকে আর বাবা ডাক শুনতে পাবেন না তিনি।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, অপহরণ করা হয়েছে জানিয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সোলাইমান। থানায় জিডি করি। শেষ পর্যন্ত ‘মেয়েকে পেয়েছি, তবে ততক্ষণে সে মৃত’।
ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের মহেশখালীতে। তবে শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতের মতো তাকেও চট্টগ্রামে অপহরণ করা হয়েছে। খুনি সোলায়মান মাহির পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। রোববার পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য দেন সোলায়মান।
শিশু মাহি মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ সায়রা ডেল এলাকার আয়াত উল্লাহর মেয়ে এবং দক্ষিণ সায়রা ডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত সোলায়মান রামু উপজেলার চাকমারকুল এলাকার সৈয়দ করিমের ছেলে।
মাহির বাবা আয়াতুল্লাহ কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, গত ৩০ নভেম্বর মাহি নিখোঁজ হয়। পরে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে মোবাইল ফোনে একাধিকবার পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে সোলায়মান। থানায় জিডি। অবশেষে মেয়েটিকে খুঁজে পেলেও ততক্ষণে সে মৃত।
সুলায়মান পুলিশকে জানান, ৩০ নভেম্বর দুপুর ১২টার দিকে মাহি স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দুপুর ২টার দিকে খেলতে বের হয়। এ সময় বাড়িতে স্ত্রী না থাকায় সন্তানকে ফুসলিয়ে ভাড়া বা’সায় নি’য়ে গিয়ে তার সঙ্গে দ\হিক মিলনে লিপ্ত হয়। মা’হি অ’চেত’ন হয়ে পড়লে তাকে ”শ্বা”স”’রো”’ধে’ হ”’ত্যা’ করে, লাগেজের ভেতরে রেখে রাতের আঁধারে একটি অটোরিকশায় করে পার্শ্ববর্তী পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের কড়িয়ারদিয়া এলাকায় ফেলে দেয়। তারপরও মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করছিলেন সুলাইমান।
এদিকে শনিবার ‘বিকে’লে ‘ল’ব’ণ ক্ষে’তে শিশু’টির ‘লা”’শ’ দেখে স্থানীয় বাসিন্দা’রা পুলিশে খবর দেয়। পরে মাহিকে শনাক্ত করে পেকুয়া থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোলায়মান গোপনে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করতেন। গত ১৯ অক্টোবর বিয়ের পর মাহির মামার বাসায় ভাড়া নেন তিনি। স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন তিনি। মাহি নিখোঁজ হওয়ার পর গত শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করে পুলিশ। মোবাইল ফোনের ভিত্তিতে সোলায়মানকে তার স্ত্রীসহ আটক করা হয়।
এদিকে গত শনিবার অভিযান চালিয়ে স্ত্রী-সহ সোলাইমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই মুহূর্তে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে। জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসবে বলে মনে করছে পুলিশ।