২০১১ সালে জাতীয় সংসদের সামনে মিছিলের সময় তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুককে মারধরের ঘটনায় প্রথম আলোচনায় আসেন মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রায় দুই মাস পরেও ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ দমনে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউ গ্রেফতার হননি। এদের মধ্যে হারুন অর রশিদ সবচেয়ে বেশি আলোচিত। গত ২৯ আগস্ট খবর পাওয়া যায় যে তিনি উত্তরার একটি বাসায় অবস্থান করছিলেন। তবে স্থানীয়রা বাসাটি ঘিরে রাখলেও তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। এখন শোনা যাচ্ছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, যদিও এটি নিশ্চিত নয়।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে কথা বলেছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে তার ভূমিকা এবং তাকে ঘিরে তৈরি হওয়া নানা গুজব সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, আমাকে বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে।”
হারুন দাবি করেন, সরকার সবাইকে কাজে যোগ দিতে বললেও ডিএমপি কমিশনার তাকে কাজে যোগ না দিতে এবং নিরাপদ স্থানে থাকতে বলেন। এরপরও তার নামে মামলা হয়, যা তাকে বিস্মিত করে। তিনি আরও বলেন, “আমি তো ডিবিতে কাজ করি, মারামারির কাজে নয়। অথচ আমার নামে মামলা হলো।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুজব এবং ছবি-ভিডিও সম্পর্কে হারুন বলেন, “ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারিত এসব গুজবের কোনো ভিত্তি নেই। এগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”
পুলিশ সদর দপ্তরের দেয়াল টপকে পালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সোজাসাপ্টা বলেন, “আমি পুলিশ সদর দপ্তরে যাইনি।”
তিনি আরও দাবি করেন, তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে এবং তার কাজের জন্য কোনো পুরস্কার পাননি। তবে তার বিবেকের তাড়নায় কাজ করেছেন এবং কারো ক্ষতি করেননি।
দেশবাসী কেন তাকে ঘৃণা করে, এ প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, “১২ বছর চাকরি করেছি, কোনো অন্যায় থাকলে কি ছাড় পেতাম? এখন সবাই বলছে আমি খারাপ, কিন্তু আমি কী খারাপ করেছি? কার ক্ষতি করেছি?” তিনি আরও জানান, বিএনপির নেতারাও তাকে ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার অনুরোধ করেছিলেন।