ভারতের প্রথম রূপান্তরকামী সুন্দরী নাজ জোশী। তিনি বিদেশে সাতবার সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছেন। তবে তার আয়ের কোনো স্থায়ী উপায় নেই।
নাজ জোশী ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজির (এনআইএফটি) ছাত্র। তিনি ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। নাজ তার ব্যাচে শীর্ষস্থান জিতেছে। তবে পড়াশোনার খরচ জোগাতে পানশালায় নাচতেন। এমনকি যৌনকর্মী হিসেবেও কাজ করতেন।
ছোটবেলায় নাজকে তার বাবা-মা এড়িয়ে যেতেন। কারণ তারা তার মেয়েলি আচরণের জন্য লজ্জিত ছিল। প্রতিবেশীদের ভয়ে নাজকে মুম্বাইয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠানো হয়। তিনি সেখানে মানুষ হয়ে ওঠেন।
নাজ নিজের খরচ নিজেই বহন করেছেন। লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছা ছিল তার। ১২ বছর বয়স থেকে বার ডান্সিং। মেয়ের মতো সাজতে, মেক-আপ করার সুযোগ পেতে তিনি পছন্দ করতেন। খুব একটা সমস্যা হতো না।
এভাবে আয় করে নাজও আইএমটি থেকে এমবিএ করেছেন। অধ্যয়ন ছাড়াও, পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত অস্ত্রোপচারের খরচও জোগাড় করেছিলেন নিজেই। মডেলিং এর কথা ভাবেননি। ইচ্ছে ছিল ডিজাইনার হওয়ার।
নাজ ২০১২ সাল থেকে মডেলিং এজেন্সিতে কাজ শুরু করেন। ২০১৪ সালে প্রথম সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। তার সাম্প্রতিক সাফল্য ছিল সম্রাজ্ঞী আর্থ খেতাব জয়। গত মে মাসে ভারতের হয়ে এই আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন নাজ। তিনি ১ জুন সেই প্রতিযোগিতায় জিতেছিলেন। সেই প্রতিযোগিতায় নাজ ছিলেন একমাত্র রূপান্তরকামী।
২০২০ সালে মিস ইউনিভার্স ডাইভারসিটির খেতাব জেতেন নাজ। ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পর পর তিন বার মিস ওয়ার্ল্ড ডাইভারসিটির মুকুট ওঠে তার মাথায়। এছাড়া মিস রিপাবলিক ইন্টারন্যাশনাল সৌন্দর্য রাষ্ট্রদূত হয়েছেন।
সাতটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতলেও নাজ ব্যক্তিগত জীবনে এখনও বেশ অপ্রতিরোধ্য। তার কোনো স্থায়ী আয়ের ধারা নেই। একজন ফ্যাশন ডিজাইন টপার, আইএমটি থেকে এমবিএ, নাজ অনেক চেষ্টা করেও চাকরি পেতে পারেনি।