জীবিকার তাগিদে গত বছর তিনেক আগেই দেশের মায়া ত্যাগ করে সুদূর সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন শিল্পী আক্তার নামে এক তরুণী। কিন্তু দেশ ত্যাগের কয়েক মাস পরেই সৌদি আরবের এক বাড়ির মালিকের গোটা পরিবারের কাছে রীতিমতো নানা নির্যাতনের শিকার হতে থাকেন শিল্পী আক্তার। আর এরই আলোকে সম্প্রতি গত কয়েকদিন আগেই মুঠো ফোনের মাধ্যমে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছিলেন তিনি।
পরে এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ফলে বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপে শিল্পী দেশে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে সক্ষম হন। দীর্ঘ ৩ বছর পর সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে চুনারুঘাট উপজেলার আহমেদাবাদ ইউনিয়নের তেগাঁও গ্রামে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
ঢাকা পোস্টের এই প্রতিবেদক মঙ্গলবার বিকেলে শিল্পী আক্তারের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তার বাড়িতে আনন্দের পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়।
শিল্পী আক্তার সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দূতাবাস ও বাংলাদেশ সরকারের কারণেই মৃত্যুর খাদ থেকে ফিরে আসতে পেরেছি।
নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে শিল্পী আক্তার বলেন, আমি গাসিম নামক এলাকায় থাকতাম। আমি যে বাড়িতে থাকতাম, তার মালিক, তার স্ত্রী ও সন্তানরা আমাকে সারাক্ষণ মারধর করত। মালিক আমাকে লাঠি দিয়ে মারতো। তিনি খাবার দেননি। মারধরের পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত মালিকের স্ত্রী। এমনকি মা-বাবার সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ করতে দেননি। বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মারধর করত।
মাস শেষে বেতনের কথা বললেও তাকে নির্যাতন করা হয় জানিয়ে শিল্পী আক্তার বলেন, দেশে আসলে মালিকের স্ত্রী আমার সব জিনিসপত্র রেখে দেন। কয়েকটা প্রসাধনী ছিল, সেগুলোও রেখে দেন।
এদিকে সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হওয়া ঐ তরুণী বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসায় আনন্দিত বোধ করছেন ইউএনও সিদ্ধার্থ ভৌমিক। একই সঙ্গে শিল্পী ফিরে আসায় খুশি এলাকাবাসীও।