সারা বিশ্বে চলছে অর্থনৈতিক মন্দা। আর এই কারনে এর রেশ লেগেছে বাংলাদেশেও। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এখন বেশ ঘোলাটে।আর এর মধ্যেও এবার নতুন একটি সুখবর দিলেন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধাক্কা সামলাতে সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা সাড়ে তিন লাখ মানুষকে মাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দেব। আমি আরেকটি রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করব। যার মাধ্যমে চাল, ডাল, তেল ও চিনি দেওয়া হবে… প্রতি কেজি ৩০ টাকা। ১ কোটি পরিবার এই রেশন কার্ড পাবে। যার মাধ্যমে তারা ন্যায্য মূল্যে পণ্য কিনতে পারবে। আমরা সে জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং ঘোষণা করতে পারি অতি শীঘ্রই।
রোববার (২১ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি (অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলানোর জন্য)। কারণ আমি চাই না আমার দেশের মানুষ কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হোক। সে বিষয়ে পর্যাপ্ত (ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে)… কারণ রাজনীতি তাদের (জনগণের) জন্য করা হয়।জানি না, আল্লাহ আমাকে বারবার বাঁচিয়ে রেখেছেন, হয়তো এই দেশের কল্যাণের জন্য, এই দেশের মানুষের জন্য।’
‘রাখে আল্লাহ মারে কে, মারে আল্লাহ রাখে কে’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে আমরা মুখোমুখি গুলি, বোমা বা গাড়ি হামলার শিকার হইনি। বেঁচে থেকেও দেশের কাজ করার চেষ্টা করছি।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যারা বেঁচে গেছেন তাদের পুনর্জন্মের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ ২১ আগস্ট। হ্যাঁ, সেদিন আমাদের আবার জন্ম হয়েছিল; সেদিন যারা সমাবেশে ছিলেন। তবে আমাদের দায়িত্ব জনগণের প্রতি। আর সেই দায়িত্ব যতক্ষণ দম থাকবে, পালন করব; এটাই আজকের প্রতিশ্রুতি।
তিনি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা মোকাবেলায় সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা থেকে দেশের মানুষকে কীভাবে রক্ষা করা যায় সেটাই আমাদের চিন্তার বিষয়। এ জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। শুধু সমালোচনা করেই চলবে না। সবাইকে কাজ করতে হবে।’
২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে নজিরবিহীন এই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে সহিংসতার এক দানবীয় আতঙ্ক মানবতাকে আঘাত করে। আক্রান্ত হয়েছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই ঘটনায় দলীয় নেতাকর্মীরা মানব ঢাল তৈরি করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করলেও গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ মোট ২৪ নেতাকর্মী প্রাণ হারান। .
ইতিহাসের জঘন্যতম গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকীতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন হামলায় নিহতদের স্মরণ করছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারকীয় গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ ও নিহতদের স্মরণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এ দিকে রেশনের এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে সরকারী পর্যায়ে। এ সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই সারা দেশে বইছে একটি স্বস্তির ছায়া। ঘোষনার এই দিনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম প্রমুখ। এছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।