বর্তমানে বাংলাদেশে চলছে অর্থনৈতিক সংকট। আর এই অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে এখন দেশের সরকার নিচ্ছে নানা ধরনের সব ব্যবস্থা। আর এই কারনেই এখন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
এখন থেকে যেকোনো উপায়ে বিদেশে অর্জিত অপ্রকাশিত অর্থ (কালো টাকা) ব্যাংকিং মাধ্যমে বৈধভাবে দেশে আনা যাবে। শুধুমাত্র ৭ শতাংশ ট্যাক্স প্রদান করা হবে এবং পরিমাণটি বৈধ হবে এবং আয়কর রিটার্নে দেখানো যাবে।
বিদেশে উপার্জিত অর্থ সহজে দেশে আনতে ব্যাংকগুলোর শাখা পর্যায়ে সার্কুলার আকারে ‘অফশোর ট্যাক্স অ্যামনেস্টি’ কর্মসূচি প্রদর্শন ও প্রচারের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী ‘অফশোর ট্যাক্স অ্যামনেস্টি’ সংক্রান্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও প্রচারের বিষয়ে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘আয়কর অধ্যাদেশের ধারা-১৯ এফF অনুযায়ী। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ ‘ফিনান্স অ্যাক্ট, ২০২২’, ১ এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১-এর মাধ্যমে আগামী বছরের জুলাই (২০২৩) থেকে ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশের বাইরে যে কোনো আকারে সংগৃহীত অঘোষিত অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে আইনত দেশে আনা যাবে। এবং আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত হয়। গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে।
‘অফশোর ট্যাক্স অ্যামনেস্টি’ বিধানের বিষয়ে শাখা পর্যায়ে সার্কুলার আকারে প্রদর্শনসহ গ্রাহকদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত অর্থবছর ২০২১-২০২২ -এ, মাত্র ২ হাজার ৩১১ জন করদাতা অপ্রকাশিত অর্থ বা কালো টাকা ঘোষণা করেছেন। যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয় করেছে ১১৬ কোটি টাকার কিছু বেশি। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১১ হাজার ৮৫৯ জন অপ্রকাশিত অর্থ বা কালো টাকা বৈধ বা সাদা করেছেন, যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা।
এনবিআরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের পর ২০০৭ ও ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বিনিয়োগে অবাস্তব আয় এসেছে। তখন দেশের পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। ওই দুই বছরে ৩২ হাজার ৫৫৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বৈধ হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। তা থেকে সরকার ১,২০০ কোটি টাকার একটু বেশি কর পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশের অর্থনীতির বড় ধরনের এই সংকটের সময়ে কবে কাটবে তা বলা যাচ্ছে না এখনি। তারপরেও সরকার চেষ্টা করছে এ থেকে উত্তরণের উপায় বের করার।