সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে বলে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোসহ বিভিন্ন সংগঠন সরকারকে দায়ি করে বিভিন্ন মন্তব্য করছে। দেশে রিজার্ভ পরিমান হঠাৎ করে কমে যাওয়ার কারনে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আর এ কারনে বিদ্যুৎ সেক্টরে সংকটের তৈরী হয়েছে। রিজার্ভ সম্পর্কে তথ্য দিয়ে খরচ মেটানো প্রসঙ্গে জানালেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া রোগের মধ্যেও বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলনে বাংলাদেশে দারিদ্র্য হার কমেছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা জানান।
গত ১৪ এপ্রিল বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট-রিকভারি অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স অ্যামিড গ্লোবাল অনিশ্চয়তা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া রোগের পরিস্থিতিতেও অর্থনৈতিক পুণরুদ্ধার ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০২০ অর্থবছরে যা ছিল ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। ।
ড. হাছান বলেন, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে বর্তমানে অতি দারিদ্র্যের হার ১০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্য কথায়, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং এই মহামারীতেও অর্থনীতিকে শক্তিশালী রাখতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কারণে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। একই সঙ্গে কমেছে দারিদ্র্যের হার। এটা আমাদের নয়, বিশ্বব্যাংকের বক্তব্য।
সম্প্রতি প্রকাশিত আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিডিপির দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪১তম অর্থনীতি। আর পিপিপিতে আমাদের অর্থনীতির অবস্থান আরো ওপরে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া রোগের মধ্যেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন, দেশে দারিদ্র্য ৪২ শতাংশ। বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন ৪২ শতাংশ ছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব এখনো খালেদা জিয়ার আমলে আছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার। আমাদের জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার তা বাড়িয়ে ৪৮ বিলিয়ন করেছে। বিশ্বে পণ্য, জ্বালানি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে সেই রিজার্ভ থেকে কিছু খরচ করা হয়েছে। এখন ৪০ বিলিয়ন ডলার আছে। যা দিয়ে ৬ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
তিনি বলেন, একটি দেশে ৩ মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকাটা স্বস্তিদায়ক। ওই জায়গায় আমাদের ৬ মাসের রিজার্ভ আছে। যা দিয়ে ৬ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
প্রসঙ্গত, হঠাৎ দেশের রিজার্ভ কমে যাওয়া বিভিন্ন উদ্বেগের প্রকাশ করার দেশে রিজার্ভে বিষয়ে নিয়ে তথ্য প্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এখন যা রিজার্ভ আছে তা আগামী ছয় মাসের খরচ মেটানো সম্ভব নয়।