দেশের সরকারের দায়িত্বে রয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি দেশের সরকার প্রধান এবং বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ দলের সভানেত্রী। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য নিরলাস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে ব্যপক সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি দেশের ক্রীড়া অঙ্গনের উন্নয়নের জন্যও কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি দেশের সকল বিভাগে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানিয়েছেন।
দেশের প্রতিটা বিভাগে একটি করে ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-বিকেএসপি গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আরও দুটোর (বিকেএসপি) অনুমোদন দেওয়া হয়ে গেছে। বাকিগুলো আমরা করে দেবো, যাতে সেখানে সব ধরনের স্পোর্টসের ব্যাপারে ভালো প্রশিক্ষণ নিতে পারে আমাদের ছেলেমেয়েরা, সে ব্যবস্থা আমরা করে দিচ্ছি। খেলাধুলা এবং শরীরচর্চা এটা খুবই প্রয়োজন।’ বৃহস্পতিবার বিকালে অনূর্ধ্ব ১৭ বালক এবং বালিকাদের দুটি ফুটবল টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এদিন ঢাকার কমলাপুরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’, বালক (অনূর্ধ্ব-১৭) ও ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’, বালিকা (অনূর্ধ্ব-১৭)-২০২১-এর জাতীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিটি এলাকায় খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্রীড়া খুব প্রয়োজন। ফুটবল, ক্রিকেট বা অন্য যেকোনও খেলা হোক বা যেকোনো ধরনের স্পোর্টস হোক, সেই জায়গাটা সুনির্দিষ্ট থাকবে। তাছাড়া প্রত্যেকটা এলাকায় একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত আমি একটা নির্দেশনা দিয়েছি—প্রতিটি জায়গায় যেন আমাদের বাচ্চাদের খেলাধুলার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়, সেদিকে আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘খেলাধুলার চর্চাটা যাতে আমাদের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ভালোভাবে হয়, সে জন্য ইতোমধ্যে প্রত্যেক উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম, উন্নতমানের খেলার মাঠ, সেটা আমরা করে দিচ্ছি—এ কারণে সেখানে ১২ মাসই সবাই খেলাধুলা করতে পারবে, খেলাধুলোর প্র্যাকটিস করতে পারবে।’ খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি যে আমাদের ছেলেমেয়েদের আমরা যত বেশি খেলাধুলা এবং সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে সম্পৃক্ত রাখতে পারবো, তাহলে ছেলেমেয়েরা কোনো বিপথে যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘কখনও মা/দ/কা/স/ক্ত হওয়া বা জ/ঙ্গি/বাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া বা পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া, সেগুলো করবে না। তাদের মন এবং শারীরিকভাবে খুব সুস্থভাবে খেলাধুলা করবে, পড়াশোনাও করবে, মানুষের মতো মানুষ হবে, সেটাই আমি চাই।’
ছেলেমেয়েদের আগামীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করার মতো যোগ্য করে নিজেদের গড়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা চাই যেসব ছেলেমেয়ে আজকে ফুটবল খেলছে সবাইকে আমি বলবো, তোমরা খুব মনোযোগ দিয়ে খেলাধুলা করবে। তোমাদের মনে রাখতে হবে, ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়ে প্রতিযোগিতা করতে হবে এবং সেখানে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে, আমি আশা করি। এবং সেভাবেই তোমাদের আমরা তৈরি করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তরুণ সমাজকে আমরা গড়ে তুলতে চাই উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে। আর সে ক্ষেত্রে খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা বা বিজ্ঞান শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি অর্থাৎ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস সম্পর্কে শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা গড়ে ওঠে, সেদিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছি।’ অনুষ্ঠানে অসচ্ছল ও অসুস্থ খেলোয়াড়দের জন্য আরও ২০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। অসচ্ছল ও অসুস্থদের সহায়তার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনকে’ এ টাকা দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এ ফাউন্ডেশনকে ১০ কোটি টাকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো কোনো ক্রীড়াবিদ খেলতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন, অনেক সময় আঘাতপ্রাপ্ত হন, তাদের চিকিৎসা লাগে বা যখন একটু বয়স হয়ে যায়, তখন আর খেলতে পারেন না, তখন তাদের খুব কষ্ট হয়। কাজেই এই কষ্টটা দূর করার জন্য বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশনকে আগে ১০ কোটি, সামনে আরও ২০ কোটি টাকা আমরা দিচ্ছি। একটা সিড মানি হিসেবে থাকবে। ’
যারা খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদেরও সব ধরনের সহযোগিতা করে যাবেন বলে জানান সরকার প্রধান। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে রংপুর বিভাগ ১-০ গোলে ময়মনসিংহ বিভাগকে পরাজিত করে শিরোপা জয় করে। টুর্নামেন্টে রংপুর বিভাগের নাসরিন সেরা খেলোয়াড় এবং একই বিভাগের শাম্মী আখতার ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। রংপুর বিভাগের নাসরিন এবং খুলনা বিভাগের সন্ধ্যা যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার লাভ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে খেলোয়াড়দের হাতে ট্রফি ও মেডেল তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। খেলোয়াড়দের জন্য ক/রো/না ভা/ই/রাস মহামারির মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দকৃত বিশেষ অনুদানের চেকও হস্তান্তর করেন প্রতিমন্ত্রী। কমলাপুরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম প্রান্তে এ সময় উপস্থিত ছিলেন—যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, যুব মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব প্রমুখ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও ক্রীড়া অঙ্গনে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের দিকে। এমনকি আর্ন্থাজাতিক পর্যায়ে অনেক ধরনের খেলায় অংশগ্রহন করছে বাংলাদেশ। এবং অর্জন করছে নানা ধরনের পুরষ্কার। তবে এই খাতের আরও উন্নয়নের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রধান।