দেশের আলোচিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেনকে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেছে। দীর্ঘদিন ধরে নবী হোসেন দেশ ও বিদেশে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, তিনি একটি ‘স্বাধীন রোহিঙ্গা রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিলেন, যা বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে। ২০২২ সালে সরকার নবীকে ধরার জন্য ১০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।
১৫ সেপ্টেম্বর নবী হোসেন কক্সবাজার আদালতে হাজির হন এবং তিনি যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, তাকে ছয় মাস আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল, কিন্তু সেই সময় থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করার পরই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে যে, নবীকে গ্রেফতারের পেছনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল, এবং তিনি নবীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। নবীকে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রেখে মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সংস্থার মতে, নবী বাহিনীর অন্তত ৭ থেকে ১০ হাজার সশস্ত্র সদস্য রয়েছে, যারা মাদক এবং চোরাচালান থেকে অর্থ পায়। নবীর সশস্ত্র শাখা প্রতি মাসে সদস্যদের ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতন দেয় বলে জানা গেছে। নবী বাহিনীর কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র মজুত রয়েছে, যার মধ্যে গ্রেনেড, রকেট লঞ্চারও অন্তর্ভুক্ত।
নবী হোসেনকে ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকা থেকে আটক করা হলেও, প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটিয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে মুক্তি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ১ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নবীকে পুনরায় গ্রেফতার দেখানো হয়, যা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
গোয়েন্দা তথ্য মতে, নবী সরাসরি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত হয় এবং ইয়াবা চোরাচালানের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে।