বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ যাতে তিন বেলা খেতে পারে সেই দিকটা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নজর রেখেছেন। বাংলাদেশের জনগন প্রধানমন্ত্রীকে যতটা ভালোবাসেন প্রধানমন্ত্রীও জনগনকে ততটা ভালোবাসেন। তার মত এমন জনদরদী প্রধানমন্ত্রী পেয়ে বাংলার মানুষ অনেক গর্বিত। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন আমি খাবো কিন্তু আমার প্রতিবেশী খাবেনা সেটা যেন কখনো না হয়।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু আমি খাব, ভালো থাকব, শান -শকের মধ্যে থাকব, আর আমার প্রতিবেশীরা খাবে না- এটা যেন না হয়। সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়াস্থ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার একজন নেতা-কর্মী যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, দেশের মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সে ব্যবস্থা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী বাংলাদেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে তার সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কেউ যাতে নিঃস্ব, গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত না থাকে সেজন্য সরকারের পদক্ষেপে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে যাতে কোনো এলাকায় কেউ দরিদ্র না হয়, কাউকে ভিক্ষা করতে না হয়, কেউ কষ্ট না পায়।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চলমান বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দ্বৈত আঘাতের কারণে বিশ্ব এখন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই তিনি সকল ক্ষেত্রে বিশেষ করে ক্ষমতা ও শক্তির ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। “এমনকি বিশ্বের বড় দেশগুলি, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ড, এখন খাদ্য সংকটে ভুগছে,” তিনি বলেছিলেন। আমরা এখনো ভালো অবস্থানে আছি এবং ভালো থাকার চেষ্টা করছি, যার জন্য দেশের সকল মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। ‘
দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সবার প্রতি আবারো আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সবাই যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে কিছু তৈরি করে এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা থাকে তাহলে বাংলাদেশে কোনো অভাব থাকবে না। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সমৃদ্ধির পথে অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে তার সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে, প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে, প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে বাসস্থান দিয়েছে এবং সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। তবে দেশে-বিদেশে কিছু লোক আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করছে।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের দোষ কী? কোন অপরাধে তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে হারাতে চায়? ‘তৃণমূল নেতাকর্মীদের দলের লাইফলাইন উল্লেখ করে দলের সভাপতি বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের মাঠের কর্মীরা যেন সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারা দলের কাছে আঁকড়ে থাকে। তিনি দলের নেতাদের দলের প্রত্যেক সদস্যের খোঁজখবর নিতে এবং প্রয়োজনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বলেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়া, খালেদা, এরশাদ, আইয়ুব ও ইয়াহিয়া খানের শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের কথা স্মরণ করে বলেন, শত নির্যাতনের মধ্যেও আওয়ামী লীগ সংগঠন সব সময় শক্তিশালী ছিল। ২৫ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচল উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী আজ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে পদ্মা পাড়ি দিয়ে সড়কপথে প্রথমবারের মতো গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তার পৈতৃক বাড়িতে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ।
শেখ হাসিনা জাতির পিতার সমাধিতে ফাতেহা পাঠ করেন এবং জাতির পিতা এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের গণপ্রাণনাশের অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মহান স্থপতির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রসঙ্গত, মানুষ চায় দুবেলা দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকতে। আহার যোগার করতেই মানুষ নামে জীবন যুদ্ধে। পেটে ক্ষুধা থাকলে জীবনে কেউ সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। তাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কেউ যেনো না খেয়ে থাকে। তিনি জনগনের মৌলিক অধিকার রক্ষার্থে বদ্ধপরিকর।