বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ করুন।বিশেষ করে দেশের রিজার্ভের অবস্থা খুবই করুণ। আর এই কারনেই সরকার থেকে ঋণের জন্য আবেদন করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এর কাছে। এবার জানা গেলো একটি আশানুরূপ খবর। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি দল বাংলাদেশকে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার (৪.৫ বিলিয়ন ডলার) ঋণ প্রদানের বিষয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় এসেছে।
তারা বুধবার থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সাথে বৈঠক করবেন। দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আইএমএফের কান্ট্রি চিফ রাহুল আনন্দ। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত জুলাইয়ে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়ে চিঠি দেয়। চলতি মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফের বার্ষিক সভায় ঋণ পাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভার ফাঁকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে দলটি আইএমএফের সাথে এক দফা আলোচনা করে।
আইএমএফ গত ২১ অক্টোবর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তাদের এবারের ঢাকা সফর মূলত বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের সংস্কার ও নীতি নিয়ে আলোচনা করতে। সরকারি পর্যায়ে চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করাই সফরের উদ্দেশ্য। আলোচনার মধ্যে আইএমএফ এর এনহ্যান্সড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ), এনহ্যান্সড ফান্ডিং ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) প্রোগ্রাম এবং নিউ ইনিশিয়েটিভস, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফান্ড (আরএসটিএফ) প্রোগ্রাম থেকে ধার নেওয়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আরএসটিএফ ঋণ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলিকে সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন প্রদান করে। আইএমএফ থেকে ঋণ চেয়ে চিঠিতে এই আরএসটিএফের কথাও উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ।
এক দশক আগে আইএমএফের ইসিএফ থেকে বাংলাদেশ ৭ কিস্তিতে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছিল। এরপর কোম্পানি থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।
আইএমএফের কাছে পাঠানো চিঠিতে ঋণের অনুকূলে সার্বিক অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ।
সূত্র জানায়, বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সঙ্গে আইএমএফ দল নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করবে। এরপর একে একে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের আরও কয়েকটি দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে দলটি। আগামী ৮ বা ৯ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে দলটির শেষ বৈঠক হবে।
বাংলাদেশে রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকীকরণ, রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমকে গতিশীল করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় কর আদায় বৃদ্ধি, আয়কর আইন ও শুল্ক আইন প্রণয়ন, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং মন্দ ঋণ হ্রাস, শুল্ক আইন প্রণয়ন। ভর্তুকি এবং প্রণোদনা, রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি ঠিক করা। বিষয়টি আইএমএফ-এ আলোচনা করা হবে।
জানা গেছে যে $৪.৫ বিলিয়নের মধ্যে $১.৫ বিলিয়ন অর্থ প্রদানের ভারসাম্য এবং $১.৫ বিলিয়ন বাজেট সহায়তার জন্য উপলব্ধ হতে পারে। বাকি ১.৫ বিলিয়ন ডলার আইএমএফের আরএসটিএফ থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, এ দিকে দেশের রিজার্ভের অবস্থা এখন একেবারেই তলানির দিকে। জানা গেছে দেশের বর্তমান রিজার্ভ নেমে গেছে ৩৫ বিলিয়নের নিচে। আর এই কারনে দেশের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক অবস্থায় রয়েছে বেশ সংকটে।