বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি আগামী এক বছর চ্যালেঞ্জের মুখে থাকবে। সংস্থাটি জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে ৪ শতাংশে নেমে আসতে পারে, তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা ৫.৫ শতাংশে উন্নীত হতে পারে।
১৫ অক্টোবর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ইকনোমিস্ট ধ্রুব শর্মা, ইকনোমিস্ট নাজমুস খান এবং সিনিয়র যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বহিরাগত চাপ, আর্থিক খাতের দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সহ একাধিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব কারণে প্রবৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে না।
বিশ্বব্যাংক আরও উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশে কর্মসংস্থান প্রাতিষ্ঠানিক খাতে স্থানান্তর করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যেখানে বর্তমানে ৮৪.৯ শতাংশ কর্মসংস্থান অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে রয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কর্মসংস্থান ৯.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
ব্যাংকিং খাতের সংকট বিশেষভাবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, খেলাপি ঋণের হার উদ্বেগজনকভাবে বেশি, যা সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করায় বেসরকারি খাতে ঋণ গ্রহণ কমে গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুসারে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৩.২ শতাংশ থেকে ৫.২ শতাংশের মধ্যে থাকবে, যার মধ্যবর্তী পয়েন্ট ৪ শতাংশ। গত এপ্রিল মাসে বিশ্বব্যাংক চলতি অর্থবছরের জন্য ৫.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল, যা এখন কমিয়ে ৪ শতাংশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ফাঁক রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন জরুরি। বিশেষ করে, প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে কারিগরি শিক্ষার দক্ষতা উন্নয়ন প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেনি। বিশেষত শিক্ষিত তরুণদের জন্য চাকরির অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ।