দেশের অন্যতম বৃহৎ কাপড়ের হাটে ভয়াবহ আগুন, জানা গেল শেষ পরিনতি

দেশের অন্যতম বড় পাইকারি কাপড়ের বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাটে একটি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৩২টি দোকান পুড়ে গেছে। এতে ১০ কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

নরসিংদী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক শিমুল জানান, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে শেখেরচর-বাবুরহাটের জিয়া উদ্দিন মার্কেটে আগুনের সূত্রপাত হয়।

তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট রাত আড়াইটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বাজারের ব্যবসায়ী, বণিক সমিতির নেতারা জানান, এই পাইকারি কাপড়ের বাজারে প্রতি শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক হাট বসে। তবে বৃহস্পতি ও রবিবার বাজার খোলা থাকে বেচাকেনার জন্য। এ মার্কেটে ছোট-বড় প্রায় পাঁচ হাজার দোকান রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে প্রায় সব দোকানেই প্রচুর কাপড় তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জিয়া উদ্দিন মার্কেটের রাস্তায় হঠাৎ আগুনের ধোঁয়া দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। মুহূর্তের মধ্যে আগুন বেশ কয়েকটি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে দোকান মালিকরা লোকজন নিয়ে মালামাল সরিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।

এ সময় আগুনের ধোঁয়া ও লেলিহান শিখায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সর্বস্ব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন পোড়া দোকানের ব্যবসায়ীরা।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা রাফি বলেন, “খবর পেয়ে মাধবদী ফায়ার সার্ভিসের দুইটি, নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের দুইটি, পলাশ ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের একটি ইউনিটসহ মোট সাতটি ইউনিট প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুণ নিয়ন্ত্রনে আনে।

“কিন্তু এর মধ্যেই প্রায় ৩২টি দোকান পুড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক শর্টসাকিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি।”

তবে জিয়া উদ্দিন মার্কেটের মালিক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আগুনে থ্রিপিস, বিছানার চাদর ও তোশকের কাপড়ের ৩২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।  এসব দোকান থেকে কোনো কাপড় সরানো যায়নি।

প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০ কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে বলে শঙ্কার কথাও জানান তিনি।

এর আগে গত বছরের ২৯ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে হাট ব্যবসায়ী সমিতির পুরনো কার্যালয় সংলগ্ন গলিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৭০টি দোকানের প্রায় ১০০ কোটি টাকার কাপড় পুড়ে ছাই হয়ে যায়।


৪০ ঘন্টার অভিযান চালিয়ে যেভাবে ছিনতাই হওয়া জাহাজ উদ্ধার করল ভারত (ভিডিও-সহ)

ভারতীয় নৌবাহিনী ৪০ ঘন্টার অভিযানের পর সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা হাইজ্যাক করা কার্গো জাহাজ এমভি রুয়েন থেকে ১৭ জন নাবিককে উদ্ধার করেছে। এ সময় ৩৫ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি ছিনতাইকৃত পণ্যবাহী জাহাজ উদ্ধারে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের গল্প প্রকাশ করেছে।

ভারতীয় নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ৪০ ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা এমভি রুয়েনের মাধ্যমে জলদস্যুদের ছিনতাইচেষ্টা ভণ্ডুল করে দেয়। এটি ভারতীয় উপকূল থেকে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে নোঙর করা ছিল। এই অভিযানে আইএনএস সুভদ্র নামের আরেকটি ভারতীয় জাহাজও অংশ নেয়।

উদ্ধারকৃত জাহাজটিতে ৩৭ হাজার টন কার্গো ছিল, যার বাজারমূল্য ১০ লাখ ডলার। রোববারই ওই জাহাজ ভারতে আনার কথা।

অভিযানে বেশ কয়েকটি জাহাজ, ড্রোন, বিমান এবং মেরিন কমান্ডো অংশ নেয়। ভারতীয় নৌবাহিনী নজরদারির সময় এমভি রুয়েন নামের জাহাজটিকে শনাক্ত করে। এরপর এই জাহাজটিকে উদ্ধারের জন্য যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা পাঠানো হয়। ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এটি শুক্রবার এমভি রুয়েনের কাছে যায়।

গত ডিসেম্বরে সোমালি জলদস্যুরা জাহাজটি হাইজ্যাক করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে সোমালিয়ার উপকূলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী যে কার্গো জাহাজ ছিনতাই করা হয়েছে, তার জন্য এ জাহাজটিকে জলদস্যুরা ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে থাকতে পারে।

এমভি রুয়েনের কাছে যুদ্ধজাহাজ আইএনএস কলকাতা যাওয়ার পর বিশেষ ড্রোন সেখানে পাঠানো হয়, নাম হাই অ্যালটিটিউড লং এনডুরেন্স। তাতে তারা নিশ্চিত হয়, এমভি রুয়েনে জলদস্যু রয়েছে। একটি ড্রোন দেখার পর গুলি চালানো শুরু করে তারা। এতে ভূপাতিত হয় ড্রোনটি।

ভারতীয় নৌবাহিনীর দ্বারা প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে একটি জলদস্যু এমভি রুয়েনের ডেকে হাঁটছে। এরপর জাহাজ দেখে সেইদিকে বন্দুক তাক করছেন। সঙ্গে সঙ্গে গুলিও চালান তিনি।

আইএনএস কলকাতা তখন এমভি রুয়েনের স্টিয়ারিং সিস্টেম নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়। এ ছাড়া জাহাজের নেভিগেশন ব্যবস্থাও অকার্যকর হয়ে পড়ে।

ভারতীয় নৌবাহিনী শনিবার এমভি রুয়েনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আকাশযান হিসেবে ব্যবহার করা হয় পি৮আই ও সি–১৭। এই অভিযানে কেউ হতাহত হয়নি।