বাংলাদেশের উপর আবারো করা নাড়ছে নতুন এক বিপদ সংকেত। আর এই বিপদ সংকেতের নাম নিপাহ ভাই’রা’স’। আর এই কারণে জারি করা হয়েছে নতুন নিষেধাজ্ঞা। এর প্রধান বাহক বাদুড়। শীত মৌসুমে কাঁচা খেজুরের রস খেলে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বাদুড়ের খাওয়া ফল খেলেও এই ভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।
এই সংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ। এ বছর আক্রান্ত ১০ জনের মধ্যে সাতজন মারা গেছেন। তাই আধা খাওয়া ফল এড়িয়ে চলার পাশাপাশি যে কোনো উপায়ে সংগৃহীত খেজুরের কাঁচা রস খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিপাহ ভাইরাস রোগের লক্ষণ সবার মধ্যে এক নয়। কখনো কখনো কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে। নিপাহ ভাইরাস রোগ সাধারণত দেখা যায় যদি হালকা থেকে গুরুতর শ্বাসকষ্ট, জ্বরের সাথে মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা, খিঁচুনি, প্রলাপ, কাঁচা খেজুরের রস পান করার দুই সপ্তাহের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বাদুড়ের আংশিক খাওয়া ফল খাওয়া বা পশুর সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসে। বা নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি। সন্দেহ করা যেতে পারে।
প্যাথলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মোশতাক হোসেন জানান, মালয়েশিয়ায় শূকরের মধ্যে ভাইরাস পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত দেশে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের কোনো ঘটনা পাওয়া যায়নি। দেশে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ খেজুরের রস থেকে। তবে বাংলাদেশে মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের ইতিহাস রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পাঠানো বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দেশের ২৮টি জেলায় নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।
আইইডিসিআর অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম মাসে দেশের ছয়টি জেলায় প্রাণঘাতী নিপাহ ভাইরাসের ১০টি ঘটনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বছর রাজশাহী, নওগাঁ, পাবনা, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ঢাকা ও নাটোরে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও সারাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, দিন দিন অনেক বেশি পরিমানে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভা’ই’রা’স। এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে গত ২২ বছরে ৩৩টি জেলায় এই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এসব জেলাকে ইতিমধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই হাসপাতালে জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের সেবা দেওয়ার সময় চিকিৎসকদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।