বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫০টি দেশ দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। দুই বছর আগে জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি টিভি১৮ সাতটি দেশের দুর্বল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভেনেজুয়েলা, আর্জেন্টিনা, জাম্বিয়া ও ঘানা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশের মোট ঋণের পরিমাণ ১৫৬ বিলিয়ন ডলার, যা ২০০৮ সালের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের মতো আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সিগুলো বাংলাদেশকে ‘জাঙ্ক’ অর্থাৎ জঞ্জাল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট ও ক্ষমতার পরিবর্তনের আগে থেকেই দেশের ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের সক্ষমতা নিম্নমুখী ছিল।
ফলস্বরূপ, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকার অবমূল্যায়ন করেছে, কিন্তু এই পদক্ষেপে তেমন সুফল আসেনি। খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে ২০২৫ সালে মূল্যস্ফীতি ১০.১ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
অপরিশোধিত ঋণের পরিমাণ বাড়তে থাকায় ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট আরও তীব্র হতে পারে। যদিও বর্তমানে কোনো ঋণ সংকট নেই, তবে অর্থনীতির অবনতি ঘটছে, যা দ্রুত সমাধানের প্রয়োজন। আইএমএফের ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ বাংলাদেশকে কিছুটা সান্ত্বনা দিয়েছে, যা ২০২৬ সাল পর্যন্ত ধীরে ধীরে ছাড় করা হবে।
২০২২ সালে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রধান আচিম স্টেইনার সতর্ক করে বলেছিলেন, ৫০টি দরিদ্র দেশ দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকির সম্মুখীন। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি সংকট এবং বাড়তে থাকা ঋণের বোঝা এই সমস্যা সৃষ্টি করছে।
প্রতিবেদনটি বলছে, ইউএনডিপি প্রধানের সতর্কবার্তা এখনো প্রাসঙ্গিক, কারণ বিশ্বের কয়েকটি দেশের দেউলিয়াত্ব ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।