বাংলাদেশের বর্তমান সময়টা যাচ্ছে খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে। শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বের বর্তমান অবস্থাও প্রায় এক। আর এই কারনে আগামী ২০২৩ সালে বাংলাদেশ মুখোমুখি হতে পারে দুর্ভিক্ষের। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট দীর্ঘায়িত হয়েছে। তবে এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যাতে কখনোই সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের কবলে না পড়ে সেজন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, এটা আমার কথা নয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বলা হচ্ছে পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ হতে পারে। আমাদের এখনই প্রাথমিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে আমাদের দেশে কখনো দুর্ভিক্ষ না হয়।
রোববার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে বেশ কিছু প্রস্তাব বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি ব্যয়ের সাশ্রয়ীতা, উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রাধিকার, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বিনিয়োগের আকর্ষণ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং প্রতি ইঞ্চি পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে এবং যথাসম্ভব লাভজনক হতে জনগণের সচেতনতা। বিদ্যুৎ এবং গ্যাস খরচে।
সরকারপ্রধান বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতি যখন অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে, তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি করেছে। এ সংকটে দু-একটি দেশ লাভবান হলেও উন্নত দেশসহ বাকি দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোও মারাত্মক সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে। যার কারণে অনেক দেশেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও রিজার্ভ কমছে। বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বহুগুণ বেড়েছে। আমাদের দেশও এর নাগালের বাইরে নয় এবং এটি আমাদের দেশেও আঘাত করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা আমাদের রেমিটেন্স পাঠায় তাদের আমরা বিভিন্ন সুযোগ ও প্রণোদনা দিয়েছি। এছাড়া আমাদের ভালো মজুদ আছে। আমাদের কাছে তিন মাসের জন্য খাবার কেনার মতো পর্যাপ্ত মজুদ আছে। আমাদের ওখানে ৫/৬ মাসের রিজার্ভ আছে। তবুও, বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের আরও মিতব্যয়ী এবং সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, তবে আমরা এখন যে বিপদে আছি তা নয়। তবে আমার বক্তব্য হল আগাম ব্যবস্থা নেওয়া। যাতে ভবিষ্যতে দেশ বা দেশের মানুষ কোনো বিপদে না পড়ে। আমাদের সেই সতর্কতাটি অত্যন্ত প্রয়োজন এবং সেই সতর্কতাই আমরা দিচ্ছি। এছাড়াও আমাদের রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে থাকা দরকার, যাতে যে কেউ সেখান থেকে কোনো তথ্য পেতে পারে। সেখানে আমাদের অর্জনগুলো তুলে ধরতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় যদি তাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই অর্জনগুলো আপডেট করে, তাহলে মানুষ জানতে পারবে আপনি কী করেছেন।
প্রসঙ্গত, এ দিকে দেশের মানুষকে আসন্ন সংকট নিয়ে বার বার সতর্ক করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এই আসন্ন বিপদ থেকে বাঁচতে মিতব্যয়ী হতে বলেছেন দেশের মানুষকে।