Saturday , November 16 2024
Breaking News
Home / economy / দুর্বল ৯ ব্যাংক নিয়ে আতঙ্ক, আপনার ব্যাংক কি এই তালিকায় রয়েছে?

দুর্বল ৯ ব্যাংক নিয়ে আতঙ্ক, আপনার ব্যাংক কি এই তালিকায় রয়েছে?

বাংলাদেশের অন্তত নয়টি ব্যাংক বর্তমানে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে, গ্রাহকদের সারাদিন অপেক্ষা করিয়েও টাকা না দিয়ে পরের দিন আসতে বলা হচ্ছে। এতে প্রায় প্রতিদিনই ব্যাংকগুলোর শাখায় গ্রাহকদের সঙ্গে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, অনেক গ্রাহক তাদের সঞ্চিত অর্থ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সমর্থন দিতে এরই মধ্যে তারা অন্যান্য সবল ব্যাংকের মাধ্যমে সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি কোনো আর্থিক সহায়তা দেবে না।

যেসব ব্যাংকগুলো টাকা দিতে পারছে না সেগুলো হলো:

  • ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ
  • সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
  • গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
  • ইউনিয়ন ব্যাংক
  • ন্যাশনাল ব্যাংক
  • ইউসিবি
  • এক্সিম ব্যাংক
  • আইসিবি ইসলামী ব্যাংক
  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা

ঢাকার কারওয়ান বাজারে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক মুশফিকা নাজনীন জানান, ব্যাংকটি গত দুই মাস ধরে একদিনে ৫,০০০ টাকার বেশি দিচ্ছে না, আর আগামী মাস থেকে দিনে মাত্র ২,০০০ টাকা তোলার সীমা নির্ধারণ করা হতে পারে। তিনি বলেন, “আমি আতঙ্কে আছি যে আমার টাকা তুলতে পারব কি না।”

আরেক গ্রাহক দীপু সিকদার বলেন, “এই ব্যাংকে আমার স্যালারি অ্যাকাউন্ট। প্রতি মাসে বেতন জমা হলেও তা একবারে তুলতে পারি না। আজ সারাদিন অপেক্ষা করেও টাকা পাইনি।”

অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, দুপুরের পর হেড অফিস থেকে কিছু অর্থ এনে গ্রাহকদের মধ্যে অল্প অল্প করে ভাগ করে দেওয়া হয়। কেউ ৫,০০০, কেউ ১০,০০০ টাকা পান, আবার কেউ খালি হাতেও ফিরে যান।

ব্যাংকের বক্তব্য

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখার ম্যানেজার টুটুল আহমেদ জানান, “তারল্য সংকটের কারণে আমরা গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছি না। তবে আমরা চেষ্টা করছি এবং আশা করি পরিস্থিতি শিগগিরই স্বাভাবিক হবে।”

ব্যাংকগুলোর ঘাটতির পরিমাণ

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, এই ৯টি ব্যাংকের তারল্য ঘাটতি ১৮,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি, ৭,২৬৯ কোটি টাকা।

বিশ্লেষকদের পরামর্শ

অর্থনীতিবিদ মামুন রশিদ বলেছেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সবল ব্যাংকগুলোকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করতে হবে। একই সঙ্গে দুর্বল ব্যাংকগুলোর প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ নিতে হবে।”

অন্যদিকে, ড. মাহফুজ কবির বলেন, “লুটপাটের কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সংকট আরও গভীর হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, “দুর্বল ব্যাংকগুলোর বিষয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই।”

গ্রাহকদের জন্য বর্তমান সংকটের সমাধানে কোনো আশার আলো না থাকায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে।

About Nasimul Islam

Check Also

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যত বিলিয়ন ডলারে এসে ঠেকলো

আমদানি বিলের জন্য ১.৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ১৮.৪৬ বিলিয়ন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *