বর্তমান সমাজে পরকীয়ার কালো ছায়া গ্রাস করে ফেলেছে। বিভিন্ন জায়গায় এই পরকীয়া সংক্রান্ত জটিলতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমাজ নষ্ট হচ্ছে সামাজিকতা এবং ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে অনেক সংসার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এর মাধ্যমে অনেকেই নিজের পরিচয় গোপন করে এই পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনছে।
সোহেল রানার সঙ্গে মৌসুমীর পরিচয় হয় ফেসবুকে। সোহেল মৌসুমীর প্রেমে পড়ে কারণ সে কুমারী বলে কথা বলে। অনেকক্ষণ মেসেঞ্জারে কথা বললেও দেখা হয়নি। তাই নিজের মনের মানুষটিকে দেখতে প্রেমিকার বাড়িতে আসেন প্রেমিকা। আর এই বাড়িতে এলে প্রেমিকের আসল রূপ জানতে পারবেন। একজন প্রেমিকা শুধু বিবাহিত নয়; বাড়িতে তার দুই সন্তানও রয়েছে। তবে প্রথম দেখায় মৌসুমীকে বিয়ে করার পর বিষয়টি জানতে পারেন সোহেল।
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে। ২২ বছর বয়সী সোহেল রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পাওটানার বীরবিড়িয়া গ্রামের ওমর ফারুক মন্ডলের ছেলে। মৌসুমী আক্তারের বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার থাপেরহাট ইউনিয়নের হাসানপাড়া গ্রামে। তার পিতার নাম মহির উদ্দিন।
দুই সন্তানের জননীর সঙ্গে ২২ বছর বয়সী এক যুবকের বিয়ে নিয়ে সাদুল্লাপুরে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। নতুন দম্পতিকে দেখার জন্য হাসানপাড়া গ্রামের মৌসুমীর বাড়িতে উৎসুক মানুষ ভিড় করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই বাবার বাড়িতে থাকছিলেন মৌসুমী। তার আট বছরের একটি মেয়ে ও চার বছরের একটি ছেলে রয়েছে। এরই মধ্যে ফেসবুকে সোহেল রানার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
গত ২১ জুলাই প্রেমিকা মৌসুমীর সঙ্গে দেখা করতে পীরগাছা থেকে সাদুল্লাপুরে আসেন সোহেল। পরে তাকে নিয়ে স্থানীয় এক কাজীর বাড়িতে গিয়ে তার আগের স্বামীকে তালাক দেন। এরপর চার লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে সোহেলের সঙ্গে কাবিননামায় সই করেন মৌসুমী।
সন্ধ্যায় সোহেলকে নিয়ে বাসায় আসেন মৌসুমী। এরপর মৌসুমীর আট বছরের মেয়ে ও চার বছরের ছেলের কথা জানতে পারেন সোহেল। প্রতারণা বুঝতে পেরে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় এলাকাবাসী সোহেলকে আটক করে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিয়ে দেন।
সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই কেএম জিয়াউল আলম জানান, বিয়ের সনদে সোহেল রানার জন্ম তারিখ ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০০০ এবং মৌসুমীর ৫ মে ২০০১ উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সোহেল রানাকে পাওয়া যায়নি। তিনি পীরগাছা গেছেন। তিনি আরও বলেন, সোহেল রানার লেখাপড়ার বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি। এছাড়া মৌসুমীর সন্তানদের নিয়ে গেছে তার বাবা।
গাইবান্ধার পরকীয়ার ঘটনা নিয়ে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছেন সাধারন মানুষের মধ্যে। অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এই অসম প্রেমের ঘটনা নিয়ে, এদিকে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের সম্পর্ক হয়। কাজী অফিসে আগের স্বামীকে ডিভোর্সের পর সোহেল রানাকে বিয়ে করেন মৌসুমী। তাদের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।