Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / দুই সতীনের পরিচয় জেল গেটে, স্বামীকে দেখা মাত্রই বেধে যায় লঙ্কাকাণ্ড

দুই সতীনের পরিচয় জেল গেটে, স্বামীকে দেখা মাত্রই বেধে যায় লঙ্কাকাণ্ড

আমাদের দেশে অনেক মানুষ রয়েছে যারা প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করে রীতিমত সংসার করছে। তদের মতই স্ত্রী মামলার এক আসামির কথা যোগাযোগ মাধ্যমে বেশে ভাইরাল হয়। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, স্ত্রীকে নি/ র্যাতনের অভিযোগে স্বামী মাসুম মোল্লা (৩৫) কারাগারে রয়েছেন। তবে সম্প্রতি কারাগার থেকে আদালতে হাজিরা দিতে আসা তার স্ত্রী তাসলিমা ( Taslima ) খাতুনের সঙ্গে দেখা হলে তিনি ভলো হয়ে যাবে এই বলে স্ত্রীকে বলেন আমার জামিন পাওয়ার ব্যবস্থা করে দাও।

স্বামীর কথায় গলে গিয়ে স্ত্রী জেলে দেখা করতে গেলে দুজনের বিবাদ মিটে যায় এবং সম্পর্ক ভালো হয়। বন্দি স্বামীর অনুরোধে স্ত্রী ১০ প্যাকেট বিড়ি ও কিছু খাবার তার স্বামীকে দিয়ে বাড়ি ফিরে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জামিনের ব্যবস্থা করেন।

তিনি জানান, সোমবার (৩০ মে ( May )) দুপুরে ( noon ) স্বামীকে আদালত থেকে জামিনে নিতে কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছিলেন স্ত্রী তাসলিমা ( Taslima ) খাতুন।

এ সময় পাশে অপেক্ষারত খুলনার ফুলতলার ( Fultala Khulna ) রোজিনার ( Rozina ) সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এ সময় রোজিনা দাবি করেন, তিনি মাসুম মোল্লার ( Masum Mollah ) দ্বিতীয় স্ত্রী এবং জেল থেকে ছাড়া পেলে স্বামীর সঙ্গে ফুলতলায় চলে যাবেন।

জেলগেটে দুই সতীনের এই পরিচয় দুজনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। প্রথম স্ত্রী তাকে কোনোভাবেই সতীন হিসেবে মানতে নারাজ! এক পর্যায়ে স্বামী মাসুমের ছোট ভাই রাজা মোল্লা জেলগেটে আসেন। তিনি উভয়কে সংযত করে বললেন, আজ যদি আমার ভাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তবে সে তোমাদের কারো সাথে যাবে না। ভাইকে বাসায় নিয়ে যাব। আমরা পরে দেখব কি হয়।

এভাবে সন্ধ্যা ৬টায় উভয় স্ত্রীর ইদ্দত শেষ হয়। মাসুম মোল্লা কারাগার থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই নারীই তার হাত ধরে টানাটানি শুরু করলে উপস্থিত লোকজন বাধা দেয়। এ সময় উপস্থিত অনেকেই জানান, মাসুম মোল্লাই সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি কোথায় যাবেন। যেখানে যেতে চান সেখানে যান।

এ সময় উভয় স্ত্রী বলেন, আপনারা বলুন কোথায় যাচ্ছেন! জবাবে মাসুম বলেন, আপনি যখন আমার জামিন পেয়েছিলেন, তখন উভয় স্ত্রী দাবি করেছিলেন যে তারা বিভিন্ন আইনজীবীকে ফি দিয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন। এমনকি ছোট বউ চিৎকার করে বলে, “তুমি জানো না, আমি আমার গয়না বিক্রি করে তোমাকে ৪০০০ টাকা দিয়ে মুক্ত করেছি।” জবাবে প্রথম স্ত্রী শিশুটির কোলে মাথা ছুঁয়ে শপথ করে বলেন, আমি আপনার কথা মতো জেলে খাবার ও বিড়ি কিনেছি। এছাড়া নারী নি/ র্যাতনের মামলায় আমি বাদী। উকিলের কাছ থেকে জেনে নিন, আমার সম্মতি ছাড়া আপনি কোনোভাবেই জামিন পাবেন না। উভয় স্ত্রীর কাছে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাসুম মোল্লা তার ভাইয়ের হাত ধরে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন।

যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা ও প্রথম স্ত্রী তাসলিমা খাতুন বাংলানিউজকে জানান, ২০১৭ সালে কেশবপুর উপজেলার কলাগাছি গ্রামের সবুর মোল্লার ছেলে মাসুম মোল্লার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই থাকেন। তাদের তিন বছরের একটি ছেলে রয়েছে। তবে তার স্বামী মাসুম মোল্লা যশোরের শিল্পনগরী নওয়াপাড়ায় ঘাট শ্রমিকের কাজ করেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে তার চলাফেরা ও কথাবার্তায় পরিবর্তন আসে। এমনকি ঘরে থাকা স্ত্রী-সন্তানরাও সন্তানের খরচ দেয় না। কিছু বললে মারবে। নারী পরিষদ নেত্রী অ্যাডভোকেট সেতারা খানমের সহায়তায় তিনি আদালতে মামলা করেন। সে মামলায় ঈদের পর জেলে যান স্বামী। যাইহোক, তার স্বামীর সুস্থতার প্রতিশ্রুতি এবং সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আশ্বস্ত হয়ে অ্যাডভোকেট সেতারা খানুমের মাধ্যমে আবার জামিনে রাজি হন। যাইহোক, সতীন তার স্বামীকে নিতে জেল গেটে এসে পরিচয় করিয়ে দেওয়া মহিলার সাথে দেখা করে।

প্রসঙ্গত, যদি একজন পুরুষ সালিসী ট্রাইব্যুনালের সম্মতি ছাড়াই পুনরায় বিয়ে করেন, তাহলে তাকে অবিলম্বে তার বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীদেরকে তাৎক্ষণিক বা বিলম্বিত দেনমোহরানার সম্পূর্ণ অর্থ প্রদান করতে হবে। বর্তমান স্বামীদের আইন আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য ফাইল করার অধিকার রয়েছে। এমনকি যদি প্রথম স্ত্রী তার দ্বিতীয় বিবাহের কারণে আলাদাভাবে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তিনি সমর্থন পাবেন। এক্ষেত্রে নাবালক সন্তানদের খাবারের খরচ দিতে হয় বাবাকে। ভরণপোষণের পাশাপাশি স্ত্রী ও সন্তানদের উত্তরাধিকারীদের অধিকার কোনো অবস্থাতেই খর্ব করা হবে না।

About Nasimul Islam

Check Also

মহিলা দলের সভাপতি হলেন ওবায়দুল কাদেরের ‘বান্ধবী’ চাঁদনী

গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা মহিলা দলের নবগঠিত কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *