বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনেকটা পরিবর্তিত হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারকে হঠাতে সমাবেশসহ আন্দোলনে ঘোষণা দিয়েছে। সেইসাথে দলটি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে দেশের বর্তমান ভোট পরিস্থিতি, মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইনের শাসন এবং গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুইডেন ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন।
ফখরুল ইসলাম সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে এবং নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেনের সঙ্গে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
জানা গেছে, আগামী নির্বাচন এবং বিরোধী দলগুলোর সভা-সমাবেশে বাধাসহ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দুই রাষ্ট্রদূতের সামনে তুলে ধরেন বিএনপি। আগামী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চান তারা।
এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের মানুষ সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। যেখানে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার সুযোগ পান। কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে তা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে বিএনপি।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রদূতরা চলে যাওয়ার পর আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা মূলত বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, ঘটে যাওয়া সামগ্রিক ঘটনা, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা, এক কথায় সব কিছু মিলিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভেতরে কী আলোচনা হয়েছে বলতে পারব না। তবে আলোচনা প্রসঙ্গে এতটুকু বলতে পারি যে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিদ্যমান সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে তো অবশ্যই হয়েছে। কারণ নির্বাচন এখন সবার মনে। দেশে ও দেশের বাইরে সবার কাছে এখন নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।
এটা সারা বিশ্বের সবার উদ্বেগের বিষয়। সবাই চায় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার আসুক, একটি নির্বাচিত সংসদ আসুক- এটাই স্বাভাবিকভাবেই সবার প্রত্যাশা। তারা সেটার ওপরে উনারা আলাপ করেছেন, আগামী দিনগুলো কী হতে পারে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা সবকিছু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কোন দিকে মোড় নেবে সে বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বর্তমান সময়ে তেমন কোনো আগাম আভাস দিতে পারছেন না। বর্তমানে বিএনপি গণ সমাবেশের মাধ্যমে যে বিষয়টি সামনে আনছে, সেটি অন্যান্য দলগুলোর চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি ও রিজার্ভ সংকটে পড়ে তাদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ নাজুক অবস্থায় গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।