দেশে প্রথমবারের মতো মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড চালু করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। সোমবার সন্ধ্যায় এক জমকালো অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বহুল আলোচিত এই পুরস্কারে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১১ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এছাড়া মফস্বলে সাংবাদিকতার প্রসারে ভূমিকা রাখায় প্রতিটি জেলার মোট ৬৪ জন মেধাবী সাংবাদিককে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী মো. হাছান মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকরা যদি বিসিএস পরীক্ষা দিতেন, তাহলে তারাও সেক্রেটারি হতে পারতেন। অনেকেই শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে সাংবাদিক হয়েছেন। অনেক সাংবাদিক বলছেন, সাংবাদিক হওয়ার কারণে অনেক অভিভাবক তাদের বিয়ে করতে চান না। এটা সত্য, তবে আমার নিজের ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে, রাজনীতি করি বলে আমার বিয়ে দু-তিনবার ভেঙে গেছে।। বাইপাস হবেন-কিন্তু যদি না আপনি একজন প্রযুক্তিবিদ না হন যে জানেন তিনি কী করছেন। প্রতিটি পেশায় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সাংবাদিকতায়ও রয়েছে। সোমবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২১ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক সাংবাদিককে প্রাণ হারাতে হয়, অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। তবুও তারা খবর দেয়। আমি তাদের সালাম জানাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বসুন্ধরা গ্রুপের আহ্বায়ক ও বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ২০২১-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। হাসান মাহমুদ। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম এবং বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২১ জুরি বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ গোলাম রহমান। দেশের বৃহত্তম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, আগামী বছর ২৫ জন অনুসন্ধানী সাংবাদিককে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে। এবং তাদের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। বসুন্ধরা গ্রুপ প্রতি বছরই এই আয়োজন করবে।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, প্রয়োজনে আরও শক্তিশালী জুরি গঠন করা হবে। সাংবাদিকদের মান উন্নয়নে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বসুন্ধরা গ্রুপ গণমাধ্যমের উদ্যোগ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের মান উন্নত হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ১১ জনকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। এছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ে সাংবাদিকতার প্রসারে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিটি জেলার ৬৪ জন প্রবীণ ও মেধাবী সাংবাদিককে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ঘিরে সাংবাদিকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো। বহুল প্রতীক্ষিত এই পুরস্কার কে পাবেন তা নিয়ে চলছে উত্তেজনা। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ঢাকার সাংবাদিকদের পাশাপাশি মফস্বল থেকেও প্রচুর প্রতিবেদন জমা পড়ে। পুরো পুরস্কার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং প্রভাব-মুক্ত হয়েছে। এ জন্য আন্তর্জাতিক মানের জুরি বোর্ড গঠন করা হয়।
একুশে পদক বিজয়ী সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, টেলিভিশন চ্যানেল টিভি টুডে-এর প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, দৈনিক দেশ রূপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিব, আলোকচিত্রী ও লেখক নাসির আলী মামুন, চলচ্চিত্র শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক ডা. গোলাম রহমানের নেতৃত্বে জুরিতে। এজেএম শফিউল আলম ভূঁইয়া, দেশ-বিদেশে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য ব্যাপক পরিচিত জুলফিকার আলী মানিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দার।
উল্লেখ্য, সাংবাদিকতার জন্য আ্যাওয়ার্ড পেয়ে খুবই উচ্ছাসিত হয়ে একজন গনমাধ্যমকর্মী বলেন, জীবনে আজ যে সম্মান পেয়েছি বসুন্ধরার মাধ্যমে তা ভোলার নয়। বসুন্ধরা গ্রুপ এমন কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত রাখুক। প্রতান্ত অঞ্চলে গনমাধ্যম কর্মীদের জীবনে এটা আমার জন্য এক বিরল সম্মান। এমনটাই মত প্রকাশ করেন জেলার স্বনামধন্য সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২১ প্রাপ্ত নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি একেএম জোবায়ের।