ঢাকাই সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল আজমেরী হক বাঁধন। লাক্স তারকা হিসেবে মিডিয়ায় আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। প্রথমত বেশকিছু ধারবাহিকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন এই অভিনেত্রী। এরপর বড় পর্দায় পা রেখেও ভক্তদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। আর এরই ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সিনেমার মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি পেয়েছেন।
এরপরই চমক দেখিয়েছেন বলিউডের ‘খুরফি’ সিনেমায় নাম লিখিয়ে। বিশাল ভরদ্বাজের সিনেমাটিতে তাকে বাংলাদেশি নারীর চরিত্রেই দেখা যাবে। চারদিকে বাঁধনের এখন বসন্ত নেমেছে। তবে মাঝখানে অনেক খারাপ সময় পার করতে হয়েছে এই অভিনেত্রীকে।
আজকের এই অবস্থানে আসা সহজ ছিল না। এক সময় হতাশা ও কষ্টে আত্মহননের পথও বেছে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। বারবার আত্মহননের জন্য পা বাড়িয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। ফিরে এসেছেন মনের জোরে, একমাত্র মেয়ের কথা ভেবে।
ভেঙেচুরে নিজেকে তৈরি করেছেন। অপেক্ষা করেছেন একদিন সুদিন ফিরবে। ফিরলো অবশেষে।
গতকাল সোমবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন বাঁধন। সেখানে ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন উত্থান-পতন ও অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। সেখানেই এসব কথা জানান তিনি।
বাঁধন বলেন, ‘আমি পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছিলাম। ২০০৫ সালের দিকে দুইবার আত্মহননের চেষ্টা করেছিলাম। এই ঘটনা নিয়ে পরে বিস্তারিত কথা বলব। ২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার আমার জীবনের এমন একটা অংশ হয়ে আসে; যেটা না থাকলে আমি বাঁধন হয়তো আজকের অবস্থানে থাকতাম না। তারা আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে।
কলেজে আমি ফার্স্ট গার্ল ছিলাম। তা সত্ত্বেও আমার মেডিকেলের পড়ালেখায় আড়াই বছরের গ্যাপ হয়। পরবর্তীতে আমি পড়ালেখা শেষ করি। এসবের অনেক কিছুই মিডিয়ার কল্যাণে সম্ভব হয়েছে।
আমার সবচেয়ে বড় অর্জন, আমার মেয়ে আমাকে হেরে যেতে দেখছে না। আমার আশপাশের নারীরা যারা বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে চায়, অনেকেই বলেন, আপু আপনি যখন কিছু অর্জন করেন, মনে হয় আমরা অর্জন করছি, এটা আমার জন্য বড় পাওয়া।’
বাঁধন আরও বলেন, ‘১৫ বছর পর আমার মিডিয়া জীবন শুরু হয়েছে। ৩৪ বছর বয়স থেকে নতুন করে জীবন শুরু করেছি। আমি অভিনয়ে আরও মনযোগী হতে চাই।’
বাঁধন অভিনীত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ আগামী ১২ নভেম্বর বড় পর্দায় মুক্তি দেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত ১২টি হলে সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে বলে জানা গেছে।
ব্যক্তিগত জীবনে ২০১০ সালে মাশরুর সিদ্দিকী সনেটের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বাংলার অন্যতম গুণী এই অভেনেত্রী। ঐ বছরেই তাদের ঘর আলোকে জন্ম নেয় একটি কন্যা সন্তান। তার নাম রাখা হয় সায়রা। তবে দাম্পত্য জীবনের কলহের ধরে দীর্ঘ প্রায় ৫ বছরের মাথায় বিচ্ছেদ ঘটে তাদের।