আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনায়নের থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান। এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের মাহবুবুর রহমান হেলাল। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি। এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমান।
রোববার (২৬ নভেম্বর) ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।
ডাঃ মুরাদ হাসানের বাবা মতিউর রহমান তালুকদার সাবেক এমপি ও জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি নিজে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ছাত্রজীবনে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
তিনি জামালপুরের একটি আসন থেকে ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন। ২০১৯ সালে, তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত হন।
প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি প্রথমে গাড়ি নিয়ে বইমেলায় প্রবেশ করে বিতর্কিত হয়ে পড়েন। এরপর মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করা হয়। মন্ত্রণালয় পরিবর্তনের মূল কারণ ছিল স্কয়ার হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে গোলযোগ সৃষ্টি করেন। তবে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী করা হলে মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। একের পর এক বিতর্কিত বক্তৃতা দিতে থাকেন।
এর মধ্যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রথম বিতর্ক সৃষ্টি করেন তিনি। তখন সমাজের একটা বড় অংশ তার সমালোচনা করে। দেশব্যাপী শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। তবে ৭২ সালের সংবিধানের পক্ষে ড. মুরাদ হাসানের একাংশের সমর্থনও পেয়েছেন তিনি। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের পক্ষে, ৭২ এর সংবিধানের পক্ষে তার অবস্থানটিও শেষপর্যন্ত বিতর্কই তৈরি করে তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আর শব্দচয়নের কারণে। এক সময়ে তিনি ডা. জাফরউল্লা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়ে তিনি অশ্লীল অভিযোগ করে ধিকৃত হন নিজদলেও।
সবশেষ তিনি জড়ান অভিনেত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে অশালীন ভাষায় কথা বলে। চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে অশ্লীলতম ভাষায় আক্রমণ করেন। । এমনকি তিনি তার ক্ষম’তার অপব্যবহার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে তাকে তুলে আনার হুমকিও দেন। ”ধ”’র্ষ”ণে”র হুমকিও দেয়। তিনি যে ভাষাকে হু’মকি দিতেন, তা ছিল অশ্লীল, ভদ্রতার সব সীমা অতিক্রম করেছে।
এদিকে মুরাদ হাসানের এসব কর্মকাণ্ড ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিব্রত সরকারি দল। এ কারণে তাকে সরকার থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর থেকে তাকে দল থেকে সরে আসতে হয়।