মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে আলোচনা সমলোচনা যেন থামছেই না। একের পর এক সমালোচনায় জড়িয়ে যাচ্ছে তার নাম। সম্পরতি তার সম্পদের পরিমান নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে এবার তা নিয়ে একটি লেখনী প্ৰকাশ করেছেন আসিফ নজরুল। পাঠকদের উদ্দেশ্যে তা তুলে ধরা হলো হুবহু:-
মাশরাফি বিন মুর্তজার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা দেখিয়ে ভারতের ক্রিকট্র্যাকার নিউজ পোর্টাল একটা সংবাদ প্রকাশ করার পর বাংলাদেশের কিছু সংবাদ মাধ্যমও একই নিউজ প্রকাশ করে। মাশরাফি ইতিমধ্যে এই নিউজের প্রতিবাদ করেছেন। নিউজটাও ভুয়া সেটাও ঠিক। তবে মাশরাফি এই নিউজের সূত্র ধরে অনেকের বিবেক আর নীতি-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আমার আপত্তিটা এই জায়গায়। ক্রিকেটার বা ক্যাপ্টেন হিসেবে মাশরাফির অবস্থান নিয়ে কারো সমস্যা নেই। কিন্তু এরপর মাশরাফি অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়েছেন।
মাশরাফি ই-অরেঞ্জ, রিং আইডি, এসপিসি ওয়ার্ল্ড নামের ৩ টা ই-কমার্স প্লাটফর্মের ব্র্যান্ড এম্বেসেডর হয়েছেন। এই ৩ টাই সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা নিয়ে প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত। এই ৩ টা প্লাটফর্ম হতে কত টাকা নিয়েছেন মাশরাফি? সেই টাকার কোন হিসাব কি দিয়েছেন কিংবা ফেরত দিয়েছেন? উনার কি উচিত ছিল না, প্রতারিত হওয়া টাকা জনগণের কাছে ফেরত দেয়ার ব্যাপারেও উদ্যোগ গ্রহণ করার?
মাশরাফির এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে। উনি হামলাকারীদের চিনেও তাদের নাম প্রকাশ করেননি এবং শাস্তি নিশ্চিত করেননি।
উনার সম্পদের পরিমাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও উনি সেটা প্রকাশ করেননি। শুধু হালকা প্রতিবাদ জানিয়েই রণে ভঙ্গ দিয়েছেন। একজন সাংসদ হিসেবেও তো উনার সম্পদের পরিমাণ জানা জনগণের অধিকার।
সর্বোপরি যেভাবে উনি জনপ্রতিনিধি হয়েছেন সেই পদ্ধতিটাও প্রশ্নবিদ্ধ।
অন্যের বিবেক আর নীতি-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা সবসময়ই সহজ।
অবশ্য যে দেশে রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্তা শুধু স্বাস্থ্য পরীক্ষা আর চোখের চিকিৎসার জন্য জার্মানি আর ইংল্যান্ডে কয়েকজন সফরসঙ্গীসহ ১৬ দিনের সফরে যান, সেখানে বিবেক আর নীতি-নৈতিকতা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই।
সরকারী কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর পর্যন্ত পুরোপুরি এখনো বন্ধ হয়নি। অথচ দেশে দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। ডলারের অপ্রতুলতার কথা বারবার বলা হচ্ছে। তাছাড়া এধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাংলাদেশের চিকিৎসা আর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মান নিয়েই অনেক প্রশ্ন তুলে দেয়। উনাদেরই কোন কনফিডেন্স নেই দেশের ডাক্তারদের উপর, আমাদের মধ্যে আসবে কিভাবে?
দুঃখিত মাশরাফি, আপনার ইমেজ আপনি নিজেই সংকটে ফেলেছেন। মানুষের আস্থা আর বিশ্বাস এর জায়গাটা নিজের কাজ দিয়েই নড়বড়ে করে দিয়েছেন। নইলে এসব ভুয়া নিউজ কেউ বিশ্বাস করত না।
প্রসঙ্গত, মাশরাফির সম্পদের পরিমান নিয়ে প্রকাশ হওয়া ভারতের সংবাদ মাধ্যম এ প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশে তাকে নিয়ে হয়েছে তুমুল আলোচনা সমলোচনা। আর এ নিয়ে বেশ বিব্রত হয়েছে মাশরাফি নিজেও। জানা গেছে ইতিমধ্যে এই খবর মুছেও দিয়েছে ওই সংবাদ মাধ্যমটি।