মাঝে মাঝে রেল ভাড়া পরিশোধ নিয়ে কিছু ভিন্ন ধরনের ঘটনার কথা শোনা যায়, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনে চড়েও ভাড়া না দেওয়ায় অনুতপ্ত হয়ে রেলের সেই ভাড়া এক সাথে পরিশোধ করে যান। এমন ধরনের ঘটনা এর আগে সংবাদ মাধ্যমে দেখা গেছে। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটলো কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশনে। ভুল স্বীকার করে ঐ রেলস্টেশনে বিনা টিকিট ভ্রমণকারী অজ্ঞাতনামা এক ট্রেন যাত্রী মাশুল জমা দিয়েছেন। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী সোহাগ হাসানের কাছে ৯ হাজার ৯৯০ টাকা জমা দিয়ে রশিদ গ্রহণ করে পাপমুক্ত হন।
টাকা পরিশোধের সময় তিনি বলেন, বহু বছর ধরে দিনের পর দিন বিনা টিকিটে ট্রেনে যাতায়াত করেছি, এতে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। শনিবার রাতে টাকা জমা দেওয়ার পর ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি আবারও টাকা নিয়ে আসবেন, তারপর তার পরিচয় জানাবেন।
প্রধান বুকিং সহকারী সোহাগ হাসান বলেন, শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পঞ্চাশোর্ধ বয়সের এক ব্যক্তি হঠাৎ আমার রুমে ঢুকে বলেন, বহু বছর ধরে বিনা টিকিটে ট্রেনে যাতায়াত করেছেন। এ জন্য তিনি খুবই অনুতপ্ত। কারণ তিনি মনে করেন, তিনি রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি করেছেন। এ কারণে অনুতপ্ত হয়ে স্বেচ্ছায় পাপমুক্ত হতে মাশুল দিতে চান। তিনি বলেন, মূলত ধর্মীয় অনুভূতির কারণেই তার এই সিদ্ধান্ত।
ওই ব্যক্তি আরও বলেন, তিনি মনে করেন যারা বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ করেন, আমার ঘটনা দেখে তাদের বিবেক জাগ্রত হতে পারে। তার কথা শুনে আমি বাংলাদেশ রেলওয়ের নিয়মানুযায়ী টিকিট ফি হিসেবে ৯ হাজার ৯৯০ টাকা গ্রহণ করি।
তবে ঐ ব্যক্তি আপাতত কিছু অর্থ প্রদান করে বলেছেন, তিনি পরে আরো কিছু টাকা পরিশোধ করবেন এবং সেই সময় নিজের পরিচয় জানাবেন। তিনি আপাতত তার পরিচয় জানাননি। তবে তিনি যেটা করেছেন সেটা মানবতা কিংবা ধর্মীয় দিক চিন্তা করে হোক, সেটা অবশ্যই ভালো কিছু করেছেন। তার এই ঘটনায় নাগরিকদের অনেক শিক্ষনীয় রয়েছে।