ভারত-বাংলাদেশ পররাষ্ট্র বিষয়ক বৈঠকে অংশ নিতে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুই দিনের সফরে দিল্লি যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
আগামীকাল শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বা পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এফওসি বৈঠক ছাড়াও পররাষ্ট্র সচিব দিল্লিতে ৯০টি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন। এতে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও জাতীয় নির্বাচন, বিশেষ করে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি এবং নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি সম্বন্ধে জানানো হবে।
এদিকে দিল্লির একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ঢাকা-দিল্লি এফওসিতে অংশ নিতে ইতিমধ্যে ভারতে গেছেন।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পররাষ্ট্র সচিবের দিল্লি সফরকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে পররাষ্ট্র সচিব বুধবার (২২ নভেম্বর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে আমি দিল্লি যাচ্ছি না।
মোমেন বলেন, এ সফরে কোনো লুকানো বা গোপন আলোচ্যসূচি নেই। তবে দিল্লি যদি নির্বাচন নিয়ে জানতে চায়, তাহলে পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে। বৈঠকে রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তাসহ দুদেশের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগের কর্মকর্তারা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবেন।
৯০টি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশে কোনো দূতাবাস নেই; তবে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে এই বৈঠক হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ‘অনুমোদিত’ (সমান্তরাল দায়িত্ব পালনকারী মিশন) ৯০টি দেশের দূতাবাস দিল্লিতে রয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্পর্কে দূতাবাসগুলোকে অবহিত করা হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও জাতীয় নির্বাচন, বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের অঙ্গীকার এবং নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানানো হবে।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এসব দূতাবাসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বিদেশী পর্যবেক্ষকদের আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এসব বিষয়ে জানানো হবে। জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনে (আইএমও) বাংলাদেশের প্রার্থীতার জন্য প্রচারণা চালানোরও সুযোগ হবে এটি। ৯০টি দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফিং প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে ভারত সব জানে। বাংলাদেশে যেসব দূতাবাস নেই তাদের ৯০টি দূতাবাস সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়টি তুলে ধরব।
চলতি বছরে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। গত ফেব্রুয়ারিতে, বিনয় কোয়াত্রা জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণ পৌঁছে দিতে ঢাকায় আসেন। এ সময় মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে তার বৈঠক হয়।